প্রফিটেবল বিজনেস গ্রোথে ৬ টি কাস্টমার অ্যাকুইজিশন স্ট্র্যাটেজি

শেয়ার করুন

কাস্টমার অ্যাকুইজিশন বা বিজনেসের জন্য একজন কাস্টমার খুঁজে পেতে আপনার কত টাকা খরচ হয়েছে? সেটি কি আয়ের তুলনায় বেশি? বিজনেসটিকে প্রফিটেবল করতে কিভাবে নতুন নতুন কাস্টমার খুঁজে পাবেন? 

যদি এই সকল প্রশ্নের উত্তর আপনার কাছে না থাকে তবে কবে নাগাদ আপনার বিজনেস প্রফিটেবল হবে সেটি ধারনা করা কষ্টকর। একটি স্টার্টআপ শুরু করার পরে তার বিজনেসের গ্রোথের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ব্যর্থ হলে সেটি  মুখ থুবড়ে পড়ে, প্রয়োজন বেশি সংখ্যক পটেনশিয়াল কাস্টমার। 

আর তাই প্রয়োজন কাস্টমার অ্যাকুইজিশন স্ট্র্যাটেজি।

কাস্টমার অ্যাকুইজিশন হচ্ছে আপনার ব্র্যান্ড থেকে কেনাকাটা করার জন্য আদর্শ কাস্টমার খুঁজে পাবার প্রসেস। তবে অবশ্যই সে কাস্টমার রান্ডম কাস্টমার না, হতে হবে রিপিট কাস্টমার। এবং এই প্রসেসটি আবশ্যিকভাবে পরিমাপ যোগ্য।

একটি বিজনেস এর সফলতার জন্য আদর্শ কাস্টমার গ্রুপ খুঁজে পাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং শুধুমাত্র সেই কাস্টমার গ্রুপ খুঁজে পেলেই চলবে না তাদের কাছে বারবার বেচাকেনার মাধ্যমে  সেই পরিমাণ রেভিনিউ জেনারেট করতে হবে। রেভিনিউের পরিমান হতে হবে গ্রস মার্কেটিং খরচের চেয়ে বেশি।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ক্ষুদ্র এবং মাঝারি উদ্যোক্তাদের একটি বড় অংশ কাস্টমার অ্যাকুইজিশন প্রসেস তার বিজনেস মারকেটিং স্ট্র্যাটেজির মধ্যে রাখেন না।  যার ফলে এলোমেলো কাস্টমার অ্যাকুইজিশন চলে এবং এর জন্য করা খরচ রেভিনিউের বিপরীতে পরিমাপযোগ্য না। 

ফলাফল খুব পরিষ্কার,  প্রতিবার নতুন কাস্টমার খুঁজে পেতে এবং পুরনো কাস্টমারের কাছে বেচাকেনা করতে আপনাকে যে পরিমাণ মার্কেটিং ইনভেস্ট করা লাগে তার পরিমাণ বিজনেসের রেভিনিউের চেয়ে অনেক বেশি।

অর্থাৎ আপনি লসে বিজনেস করছেন।

আর তাই আপনার প্রতিষ্ঠানকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে হলে কাস্টমার অ্যাকুইজিশন এ মনোযোগী হতে হবে,  খুঁজে বের করতে হবে এমন কিছু মার্কেটিং কৌশল যা আপনাকে মার্কেটিং ব্যয় কমিয়ে এনে আরো বেশি পরিমাণে রেভিনিউ জেনারেট করতে সাহায্য করবে।

উপরের চিত্রটি খেয়াল করুন একজন কাস্টমার প্রোডাক্ট কেনাকাটার পূর্বে কতগুলো স্টেজ পার হয়ে আসে যেটিকে মারকেটিং ফানেল বলা হয়।

এবং প্রতিটা স্টেজের জন্য কাস্টমার অ্যাকুইজিশন খরচ ভিন্ন ভিন্ন রকম হয়ে থাকে।  আপনাকে প্রতিটি মার্কেটিং ফানেল স্টেজে কাস্টমারদের জন্য ভ্যালু ক্রিয়েট করতে হবে।  যাতে করে কাস্টমার আপনার প্রোডাক্ট কে বেছে নেয়, একই সাথে পরিমাপ করতে হবে একজন কাস্টোমার যখন আপনার থেকে পণ্য কেনাকাটা করে তখন তাকে খুঁজে পেতে এবং তার কাছে বেচাকেনা করতে আপনাকে কি পরিমান মার্কেটিং ব্যয় করতে হয়েছে।

এবারে যখন মার্কেটিং খরচগুলো সম্পর্কে জানলেন এবারে হিসাব করতে হবে তার কাছে আপনি কি পরিমান বেচাকেনা করেছেন।  কাস্টমারকে খুঁজে পেতে মার্কেটিং ব্যয় এবং তার বিপরীতে আপনার টোটাল কতজন কাস্টমার খুঁজে পেলেন তার ভাগফল হচ্ছে  কাস্টমার অ্যাকুইজিশন খরচ। 

Marketing Spend ($500) / New Customers ($50) = CAC ($10 per customer)

এখন আপনার একজন কাস্টোমার আপনার জন্য কি প্রফিটেবল?  সেটা জানতে হলে আপনাকে আরেকটি হিসাব করতে হবে যার সূত্রটি নিচে দেয়া হয়েছে, 

Average Order Value ($50) x Gross Margin (50%) – Customer Acquisition Cost ($10) = Profit ($15)

একজন কাস্টমারের অ্যাভারেজ অর্ডার ভ্যালু গুণিতক গ্রস  মার্জিন,  এটি থেকে কাস্টমার অ্যাকুইজিশন খরচ বাদ দিতে হবে। তাহলেই বের হবে তার কাছে  বেচাকেনা করে আপনি কি পরিমান প্রফিট করেছেন। 

কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য

কাস্টমার অ্যাকুইজিশনের প্রথম ধাপ কখনোই প্রফিটেবল হয় না।  অর্থাৎ বিজনেসের প্রথমদিকে কাস্টমার অ্যাকুইজিশনের জন্য আপনাকে বেশি পরিমাণে খরচ করতে হয় এবং ধীরে ধীরে এই অ্যাকুইজিশন খরচ কমতে থাকে।  একটি পর্যায়ে আপনার বিজনেস ব্রেক ইভেন্ট পয়েন্ট পৌঁছায় যেখানে কাস্টমার অ্যাকুইজিশন খরচ এবং আপনার প্রফিট মার্জিন সমান হয়।  

এরপরে ধীরে ধীরে সে কাস্টমারের বিপরীতে মার্কেটিং খরচ কমতে থাকে এবং প্রফিট বাড়তে থাকে।

প্রশ্ন আসতে পারে কেন প্রথমদিকে  অ্যাকুইজিশনে খরচ বেশি হয় 

আপনার বিজনেসটা যখন একেবারেই নতুন সেসময় আপনাকে কেউ চেনেনা ফলে ব্র্যান্ড অ্যাওয়ারনেস এর জন্য আপনাকে একটি বড় এমাউন্ট ব্যয় করতে হয় কিন্তু সেই সময় আপন সেল জিরো থাকে ।

এরপরে কাস্টমার এঙ্গেজ হতে থাকে কিন্তু তখনও আপনার মার্কেটিং খরচ করতে থাকতে হয় এঙ্গেজমেন্ট  পিরিয়ডে কিছু সেল যদি ও আসে তবে সেটি প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই কম।

এরপরেই কাস্টমার কনভার্শন এবং এই স্টেজে কাস্টমার আপনার প্রোডাক্ট  কেনে কিন্তু সেই সময় তাকে প্রোডাক্টটি দেখাতে এবং তার জন্য সেটি উপযোগী কিনা সেটি বোঝাতে আপনাকে এডভার্টাইজিং এর খরচ করতে হয়।

খেয়াল করে দেখুন, মার্কেটিং ফানেলের তিনটি স্তর আপনাকে পার করতে হচ্ছে প্রতিটি স্তরে আপনাকে মার্কেটিং বাজেট খরচ করতে হচ্ছে ফলে স্বাভাবিকভাবে একজন কাস্টমারের  বিপরীতে আপনার মার্কেটিং খরচ বাড়তে থাকে।

এরপর যখনই সে কাস্টমার আপনার থেকে কেনাকাটা সম্পন্ন করে, তখন আপনার প্রোডাক্ট আপনার সার্ভিস কোয়ালিটি সম্পর্কে অবগত হয়।  

পরবর্তী সময়ে তাকে শুধুমাত্রই রিটার্গেট করেই বেচাকেনা করতে পারেন। এতে করে দুই স্তরের মার্কেটিং খরচ কমে যাচ্ছে এবং এই সময় আপনি ব্রেক ইভেন্ট পয়েন্ট যেতে পারবেন।  এবং যত বেশি সে কাস্টমার কেনাকাটা করবে  কাস্টমার অ্যাকুইজিশন খরচ কমতে থাকবে এবং এর বিপরীত আপনার  বেচাকেনার পরিমাণ বাড়তে থাকবে। 

কাস্টমার অ্যাকুইজিশনের জন্য কি পরিমান ব্যয় করা যৌক্তিক? 

প্রশ্ন আসতে পারে আমি ঠিক কি পরিমান মার্কেটিং খরচ করব একজন কাস্টমারকে পাবার জন্য?  এ বিষয়টি নির্ভর করবে আপনার প্রোডাক্টের প্রাইস কাস্টমারদের পারচেজ ফ্রিকোয়েন্সি এবং প্রতিটা পারচেসে আপনার জেনারেট করার রেভিনিউের পরিমাণ।

বিশেষ করে হাই ভ্যালু প্রোডাক্টের ক্ষেত্রে কাস্টমার অ্যাকুইজিশন খরচ ফার্স্ট টাইমে অনেক বেশি থাকে কিন্তু হাই ভ্যালু প্রোডাক্ট পারচেস করলে একটি সেলে সেই হেলদি প্রফিট করা যায়।

অপরদিকে মিড রেঞ্জের প্রোডাক্টের ক্ষেত্রে কাস্টমার অ্যাকুইজিশনের খরচ তুলনামূলক বেশি থাকে কিন্তু সে অবস্থা থেকে প্রফিটেবল পর্যায়ে যেতে হলে কাস্টমার পারচেস ফ্রিকুয়েন্সি বাড়াতে হয়।  

তাই প্রতিটি সেল থেকে আপনি কি পরিমান প্রফিট জেনারেট করতে পারেন এবং সেটি স্বল্পমেয়াদী নাকি দীর্ঘমেয়াদী তার উপর নির্ভর করবে আপনার কাস্টমার অ্যাকুইজিশনের খরচ কতটুকু পর্যন্ত আপনি চালিয়ে যাবেন।

কাস্টমার অ্যাকুইজিশন প্রসেস

প্রতিটি বিজনেসের জন্য তার আদর্শ কাস্টমার খুঁজে পাওয়া অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং বিষয় এবং এর পিছনে প্রতিটি ব্যান্ড সর্বোচ্চ শ্রম দিয়ে থাকে।  বিভিন্ন সময়ে কাস্টমার অ্যাকুইজিশনের পদ্ধতিতে পরিবর্তন এসেছে কিন্তু মূল বক্তব্য সেই একটিই টার্গেট অডিয়েন্স খুঁজে পাওয়া।

পেইড মার্কেটিং

 

কাস্টমার অ্যাকুইজিশনের জন্য পেইড মার্কেটিং বর্তমান সময়ের সবচেয়ে ইফেক্টিভ প্রসেস।  বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এ নিয়মিতভাবে টার্গেট গ্রুপকে  এঙ্গেজ রাখতে হবে।

খুঁজে বের করুন আপনার কাস্টমার কোথায় থাকে তারা কোন চ্যানেল গুলো ব্যবহার করে এবং সেই চ্যানেলগুলোতে পেইড মার্কেটিং পরিচালনা করুন।

 যেমন ধরুন, আপনার কাস্টমার ফেসবুক ব্যবহার করে সেক্ষেত্রে আপনি ফেসবুকে মার্কেটিং করতে পারেন। যদি আপনার কাস্টমার গুগোল ইকোসিস্টেমের মধ্যে থাকে তবে আপনি গুগলে এড দিতে পারেন এবং ওয়েব ট্রাফিকের জন্য এই দুটিই বর্তমান সময়ে অত্যন্ত শক্তিশালী মাধ্যম। 

Influencer স্পন্সরশিপ

কাস্টমার অ্যাকুইজিশন খরচ কমিয়ে নিয়ে এসে ইফেক্টিভ ভাবে আইডিয়াল কাস্টমারদের এঙ্গেজ করার জন্য Influencer স্পন্সরশিপ প্রোগ্রাম বর্তমান সময়ে অনেক জনপ্রিয়।

তাহসান-মিথিলার ব্র্যান্ড এনগেজমেন্ট ক্যাম্পেইন অথবা সোশ্যাল মিডিয়া কন্টেন্ট ক্রিয়েটর দিয়ে প্রোডাক্টের রিভিউ এবং আনবক্সিং এগুলো এখন বাংলাদেশে বহুল পরিমাণে চর্চা হচ্ছে। 

এর মূল সুবিধাটি হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া Influencer দের অডিয়েন্স বেজ অনেক বড় থাকে এবং নিস মার্কেটের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া Influencer অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে যেখানে তার মাধ্যম দিয়ে কোন একটি প্রোডাক্ট প্রমোট করলে সহজেই একটা বড় পরিমাণ অডিয়েন্স গ্রুপের কাছে পৌঁছে যাওয়া যায়। 

যদিও পেইড মার্কেটিং দ্বারা  কাজটি করা সম্ভব কিন্তু সেটি ব্যয়বহুল।  এক্ষেত্রে  Influencer স্পন্সরশিপ কার্যকরী। .

আমরা দেখি, বাংলাদেশের মোবাইল কোম্পানিগুলো সোশ্যাল মিডিয়া Influencer দের সাথে চুক্তিবদ্ধ থাকে এবং তাদের দ্বারা মোবাইল ফোনের আনবক্সিং ও রিভিউ করিয়ে থাকে। 

সুবিধা

  • নিস টার্গেট  অডিওতে কাছে পৌঁছানো যায়
  • মার্কেটিং খরচ কম থাকে 
  • ব্র্যান্ড অ্যাওয়ারনেস তৈরি হয়

 অসুবিধা

  • রিটার্ন অফ ইনভেসমেন্ট ট্র্যাক করা সহজ হয় না
  •  সোশ্যাল মিডিয়া Influencer দের ওপরে ব্র্যান্ড ইমেজ অনেকটাই নির্ভর করে 

ট্রেন্ডি ব্র্যান্ড প্রোডাক্ট এবং প্রোডাক্ট দেমনস্ট্রেশন এর জন্য  এই কৌশল ব্যবহার করতে পারেন। 

ইমেইল মার্কেটিং

কাস্টমার অ্যাকুইজিশন এর আরেকটি কার্যকরী এবং সাশ্রয়ী পদ্ধতি হচ্ছে ইমেইল মার্কেটিং। ইমেইল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে আপনি একবার কাস্টমারের ই-মেইল এড্রেসটি পেয়ে গেলে পরবর্তী সময়ে আপনি নিজস্ব প্লাটফর্ম ব্যবহার করে বারবার তাকে টার্গেট করতে পারেন এবং তার কাছে আপনার প্রোডাক্ট এবং সার্ভিসের তথ্যগুলো পৌঁছাতে পারেন এবং সেক্ষেত্রে খরচ অনেক কম হয়। পাশাপাশি সরাসরি কাস্টমারের ইনবক্সে পৌঁছে যাওয়া যায়। 

যেহেতু এই পদ্ধতিতে মার্কেটিং খরচ কম এবং তার চেয়ে এভারেজ সেলসের পরিমাণ বেশি থাকে ফলে প্রফিটেবল কাস্টমার অ্যাকুইজিশন সম্ভব।

সুবিধা

  • রিকারিং কাস্টমার গ্রুপ তৈরি হয়
  • কাস্টমারদের একটি ডাটাবেজ থাকে

অসুবিধা

  • অনেক সময় ক্যাম্পেনগুলো কাস্টমারের স্প্যাম ফোল্ডারে চলে যায়

 বি-টু-বি বিজনেসের ক্ষেত্রে ইমেইল মার্কেটিং পরীক্ষিত পদ্ধতি।

 

রেফারেল প্রোগ্রাম

 

 

কাস্টমার অ্যাকুইজিশনের আরেকটি প্রসেস হচ্ছে রেফারাল  প্রোগ্রাম যেখানে একজন পটেনশিয়াল  কাস্টমার একজন নতুন পোটেনশিয়াল  কাস্টমারকে রেফার করে,  এতে করে দুই পক্ষই বেনিফিট  পেয়ে থাকে।

রেফারেল প্রোগ্রামের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে  উবার এবং পাঠাও উদাহরণ হিসেবে নেয়া যায়।

বাংলাদেশের প্রথম যখন রাইড শেয়ারিং সার্ভিসগুলো পারফর্ম করা শুরু করলো ঠিক সেই মুহূর্তে তারা সার্ভিস  গ্রহীতাদের  যারা একটি রাইড সম্পূর্ণ করেছে তাকে একটি প্রমো কোড দিতো এবং তাকে বলা হতো যদি তার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে এবং সেই বন্ধু যদি সেই কোড ব্যবহার করে সার্ভিসটি গ্রহণ করে তবে তার বন্ধু ডিসকাউন্ট পাচ্ছেই তার বিপরীতে সে নিজেও ডিসকাউন্ট  পাবে।  রেফারেল প্রোগ্রামের একটি পাওয়ারফুল টুলস।

রেফারেল প্রোগ্রামের  সুবিধা

  •  এই মার্কেটিং পদ্ধতি খরচ কম  
  • এই পদ্ধতিতে রিপিট পারচেজ করা সম্ভাবনা বাড়ে
  •  লায়াল কাস্টমার বেশি তৈরি হয়

অসুবিধা

  • এনগেজমেন্ট এর পরিমাণ অনেক কম থাকে
  • ধীরগতিসম্পন্ন প্রক্রিয়া

ট্রেডিশনাল মার্কেটিং

 

যদিও বর্তমান সময়ে ডিজিটাল মার্কেটিং অত্যন্ত পাওয়ারফুল ভূমিকা পালন করছে তারপরও যদি আপনার বাজেট অনুকূলে থাকে তবে কিছুটা হলেও টেনশনের মার্কেটিংয়ের গুরুত্বপূর্ণ জায়গা গুলোতে পদচারণা করতে পারেন

একটা আইডিয়া শেয়ার করি

ধরুন, আপনার একটি ই-কমার্স বিজনেস রয়েছে এবং তার জন্য একটি চমৎকার ওয়েবসাইট এবং মোবাইল অ্যাপ রয়েছে।  আপনি চাচ্ছেন আপনার কাস্টমার মোবাইল অ্যাপটি ডাউনলোড করুন এবং সেখান থেকে কেনাকাটা করুন এর জন্য আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং ইনভেস্ট করছেন।

একই সাথে আপনি একটি বিলবোর্ড এড দিলেন এবং সেখানে একটি বড় কিউআর কোড প্রিন্ট করে প্রচার করলেন। 

এখন রাস্তায় চলাচলকারী অডিয়েন্স যদি মনে করে আপনার অ্যাপটি ডাউনলোড করতে চাই তাকে শুধুমাত্র দূর থেকে কিউআর কোডটি স্ক্যান করলেই চলবে এবং তার ফোনে মোবাইল অ্যাপে ডাউনলোড হয়ে যাবে। 

অর্থাৎ বিজনেস মার্কেটিংকে আরো বেশি শক্তিশালী করে তুলতে ট্রেডিশনাল মার্কেটিং আপনি ব্যবহার করতে পারেন এবং ট্রেডিশনাল মার্কেটিং সবসময়ই এভারগ্রীন।

ট্রেডিশনাল মার্কেটিং এর সুবিধাগুলো হচ্ছে 

  • এখানে ওয়ান টাইম ইনভেসমেন্ট লং টাইম এক্সপোজার 
  • কাস্টমার সহজে এটিকে বিশ্বাস করে

অসুবিধা

  •  এই মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি পরিমাপ যোগ্য নয়
  •  এবং ইনভেস্টমেন্ট এর বিপরীতে রিটার্ন ক্যালকুলেশন করা সম্ভব হয় না 

এটি লোকাল বিজনেস এবং হাই ভ্যালু প্রোডাক্ট এর ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং কার্যকারী পদ্ধতি। 

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন

বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে গুগল এবং একই সময়ের সাথে সাথে আরও বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠছে। প্রায় ৫৬.৬  বিলিয়ন ওয়েবসাইট রয়েছে গুগল  নেটওয়ার্কে যার মধ্যে 200 মিলিয়ন অ্যাক্টিভ ওয়েবসাইটের সন্ধান পাওয়া যায়।

এমন একটি বিশাল ডিজিটাল মিডিয়াকে ব্যবহার না করা আপনার বিজনেসের জন্য কখনই বুদ্ধিমানের কাজ নয়। 

জানলে অবাক হবেন গুগল সার্চ ইঞ্জিন প্রতি সেকেন্ডে  ৬৩০০০ সার্চ কুইরি প্রসেস করে এবং প্রতিদিন ৫.৬ বিলিয়ন সার্চ কুইরি ট্রান্সলেট করে। 

তাই গুগল সার্চের শীর্ষে আপনার বিজনেসকে রাখতে হলে এসইও প্রয়োজন

এস-ই-ও এর সুবিধা

  • এটি অর্গানিক ট্রাফিক পেতে সাহায্য করে
  • এটি একটি এভারগ্রীন মার্কেটিং স্ট্রাটেজি

এর অসুবিধা গুলো হচ্ছে

  •  এস-ই-ও থেকে রেজাল্ট পেতে অনেক দেরি হয়
  •  এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া

পরিশেষে

একটি বিজনেসের বেড়ে ওঠার জন্য নতুন কাস্টমার এবং রিপিট কাস্টমার দু’টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।  কাস্টমার যখন আপনার ব্র্যান্ড থেকে বারবার কেনাকাটা করতে থাকবে তখন আপনার মার্কেটিং ব্যয় গুলো কমতে থাকবে এবং তার বিপরীতে আপনি কাঙ্খিত রেভিনিউ জেনারেট করতে সক্ষম হবেন।

কাস্টমার অ্যাকুইজিশন একটি চলমান প্রক্রিয়া প্রতিনিয়ত বিজনেসের জন্য নতুন নতুন কাস্টমার তৈরি হচ্ছে আবার কিছু কাস্টমার নষ্ট হচ্ছে।  

নতুন কাস্টমারদের  আকর্ষণ করার জন্য নিত্যনতুন কৌশল অবলম্বন করা এবং রিপিট কাস্টমারদের কে ধরে রাখার জন্য মারকেটিং প্রসেস কে অপটিমাইজ করা ও তাদের এঙ্গেজ রাখা প্রয়োজন।  আরে প্রকৃতির মাধ্যমেই আপনি একটি প্রফিটেবল ই-কমার্স বিজনেস এ পরিণত হতে পারবেন। 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট

বিজনেসের জন্য ফেসবুক লাইভ (Facebook Live) গাইড:  কি, কেন, কীভাবে?

বিজনেসের জন্য ফেসবুক লাইভ (Facebook Live) গাইড: কি, কেন, কীভাবে?

শেয়ার করুনফেসবুক লাইভ (Facebook Live) কি? ফেসবুক লাইভ ফেসবুকের এমন একটি ফিচার যা একজন ইউজারকে তার বন্ধু, ফলোয়ার এবং পাবলিকদের...

গুগল ট্যাগ ম্যানেজার (Google tag manager) এর কাজ ও ব্যবহার

গুগল ট্যাগ ম্যানেজার (Google tag manager) এর কাজ ও ব্যবহার

শেয়ার করুনডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে কাজ করলে অথবা ইন্টারেস্ট থাকলে আপনি হয়তো গুগল ট্যাগ ম্যানেজার (GTM) এবং ফেসবুক পিক্সেল সম্পর্কে শুনে...

৭ টি সেরা সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং (SEM) টুল

৭ টি সেরা সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং (SEM) টুল

শেয়ার করুনআজ আমরা সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং করার ৭ টি সেরা টুল সম্পর্কে ধারনা দেবার চেষ্টা করবো। সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং করার...

আপনার মূল্যবান মতামত দিন

মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না। আবশ্যক ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত *

আগের মন্তব্য গুলো পড়ুন

সবার আগে মন্তব্য করুন