ফেসবুক বিজনেসে সফল হতে আপনাকে কী কী করতে হবে?

ফেসবুক বিজনেসে সফল হতে আপনাকে কী কী করতে হবে?
শেয়ার করুন

ফেসবুক বিজনেসে সফল হতে হলে কি করবেন? এই প্রশ্নের সমাধান এখন বড় চ্যালেঞ্জ। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ফেসবুক এর অ্যালগরিদমে বড় ধরনের পরিবর্তন দেখা গেছে।

সোশ্যাল মিডিয়া  মার্কেটিং পরিচালনাকারীদের জন্য এই পরিবর্তনগুলো এখন মাথাব্যথার কারণ। 

২০১৮ সালের দিকে ফেসবুক তার অ্যালগোরিদমে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন নিয়ে এসেছিল  যে আপনারা  অনেকেই  জানেন। 

এই পরিবর্তনে  গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারটি হলো ফেসবুক নিউজফিডে কোন পোস্টগুলি অগ্রাধিকার পাবে এবং এর ক্রমানুসার কি হবে? 

২০১৮ সালের জানুয়ারিতে যখন মার্ক জুকারবার্গ ঘোষণা করেন, ফেসবুকে পরিচিত বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়, পরিবার এবং গ্রুপ থেকে প্রকাশিত পোস্টগুলো ফেসবুক ব্যবহারকারীদের বেশি পরিমাণে পাওয়া উচিত।  

এবং বিজনেস, ব্র্যান্ড এবং মিডিয়া পেজগুলো থেকে প্রকাশিত পোস্টগুলো ফেসবুক ব্যবহারকারীদের কাছে কম যাওয়া উচিত।

পক্ষপাত দুষ্ট এবং ভুয়া খবর যেন কম ছড়ায় সে জন্যই ফেসবুক ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট থেকে প্রকাশিত পোস্টগুলির ওপর বেশি গুরুত্ব দেবার পরিকল্পনা করেন। 

একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে যেন নিউজ প্রকাশ করে সুবিধা করতে না পারে তাই তাদের নিরুৎসাহিত করতে এই পরিবর্তন।। 

এ পরিবর্তনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, ব্যবহারকারী যে সংবাদ বা তথ্যগুলো বেশি পছন্দ করবে ফেসবুক তাকে সেই ভালো নেই সংবাদগুলো  দেখাবে। 

এ পরিবর্তন নিয়ে আসায় ফেসবুকের অর্গানিক রিচের পরিমান বহুলাংশে কমে যায়। পরবর্তী সময়ে ২০১৯ এবং ২০২০ সালে ফেসবুক তাদের কমিউনিটি পলিসিতে ক্রমাগত আরো পরিবর্তন করতে থাকেন। 

এতে করে ফেসবুকের মাধ্যমে  বিজনেস করা  ইতিপূর্বে যতটা সহজ ছিল বর্তমান তা কঠিন হয়ে পড়ে।  

তাহলে ফেসবুক দ্বারা বিজনেস পরিচালনায় সফলতা পাবেন কীভাবে?  

ফেসবুকের অর্গানিক রিচকে  ধরে রাখতে হবে 

 

ফেসবুক পেজের অর্গানিক রিচকে  বাড়িয়ে তুলতে হলে আপনাকে জানতে হবে ফেসবুক নিউজফিডে কীভাবে পোস্ট অগ্রাধিকার পায়।

নিউজফিড নিয়ে ফেসবুক অ্যালগরিদমের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনটি আসে ২০১৮ সালে।

ফেসবুকে ফ্রেন্ডদের পোস্টে অর্থপূর্ণ মিথস্ক্রিয়াকে উৎসাহিত করে এমন পোষ্ট গুলোকে ফেসবুক অগ্রাধিকার দেয়। 

অর্থপূর্ণ মিথস্ক্রিয়া কোনগুলো যা ফেসবুক অগ্রাধিকার দেয়

নীচে এমন কিছু বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে যেগুলোকে ফেসবুক অর্থপূর্ণ মিথস্ক্রিয়া মনে করেন,

একটি পোস্ট পড়ার পড়ে বা ভিডিও দেখে কমেন্টে মানুষ যখন একে অপরের মতামত এর বিপরীতে তাদের নিজস্ব মতামত প্রদান করতে থাকে অর্থাৎ তারা একে অপরের সাথে কথোপকথনে যুক্ত হয়, তখন ফেসবুক মনে করে এই পোস্টটি অথবা ভিডিও কনটেন্টটি অর্থপূর্ণ।

পোস্টে লাইক, কমেন্ট, বা শেয়ার দিয়ে এঙ্গেজ হওয়া মানে সেটি অডিয়েন্স পছন্দ করছে। 

যে ধরনের পোস্টগুলো  মানুষকে আকৃষ্ট করে, যুক্ত করে, জানতে এবং কথা বলতে আগ্রহী করে তোলে, সেগুলোকে ফেসবুক অর্থবহ মনে করে এবং বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়।  

নেতিবাচক কথা মিথ্যা তথ্য অথবা যা আমি শুনতে পছন্দ করছি না তা আমার কাছে যেন না আসে সেজন্য ফেসবুকের আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সিস্টেম খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে সক্ষম।

তাহলে আপনি যদি চান আপনার ফেসবুক পোষ্টের অর্গানিক রিচ বৃদ্ধি হোক তাহলে আপনাকে অবশ্যই এমন ধরনের কনটেন্ট তৈরি করতে হবে যে কনটেন্টগুলো মানুষকে এঙ্গেজ করে ও তাদের চিন্তাকে প্রকাশ করতে উৎসাহিত করে।

একটি পোষ্টের অর্গানিক রিচের পরিমাণ কম হচ্ছে তখন বুঝবেন আপনার ফেসবুক একাউন্ট অথবা ব্র্যান্ড পেজ থেকে যে ধরনের তথ্য অডিয়েন্স পেতে পছন্দ করে তা আপনি দিতে সক্ষম হচ্ছেন না। 

আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে ঠিক কি ধরনের কনটেন্ট আপনার পেজ থেকে বা আপনার একাউন্ট থেকে আপনার অডিয়েন্সরা পেতে পছন্দ করছে।

ফেসবুক এড এর ক্ষেত্রে  পেজের অর্গানিক ইম্প্রেশন কিভাবে নির্ধারণ করা হবে সে বিষয়ে ফেসবুকে পরিবর্তন নিয়ে আসে। এবং এই পরিবর্তনগুলো 17 থেকে 28 অক্টোবর 2019 থেকে কার্যকর হয়।   

এই পরিবর্তন ফেসবুকের অর্গানিক রিচ আরো বেশি কমিয়ে দেয়। 

এই পরিবর্তনে বলা হয়, ফেসবুক ভিডিও কনটেন্ট গুলিকে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিবে। বর্তমান সময়ে যার সত্যতা পরিলক্ষিত হচ্ছে।

কীভাবে ফেসবুক একটি ভিডিও কনটেন্টকে রাঙ্কিং করে?  সে বিষয়ে ফেসবুক পরিষ্কার নির্দেশনা দিয়েছে।

 

লয়ালিটি এবং ইনটেন্টঃ

যে সকল ভিডিওগুলি  বেশি সংখ্যক মানুষ দেখছে এবং সপ্তাহের পর সপ্তাহ বারবার নিউজফিডে ফিরে আসছে সেই সব ভিডিওগুলোর রাঙ্কিং ফেসবুকের কাছে সবচেয়ে বেশি। 

ভিডিও ভিউ এবং ডিউরেশনঃ 

যে ভিডিও কনটেন্টগুলো মানুষের মনোযোগ সর্বনিম্ন এক মিনিট সময় পর্যন্ত ধরে রাখতে সক্ষম এবং যে ভিডিওগুলোর ডিউরেশন কমপক্ষে তিন মিনিট সেই ভিডিও কনটেন্টগুলোর রাঙ্কিং সবচেয়ে বেশি। 

অরিজিনালিটিঃ  

যে ভিডিও কনটেন্ট গুলো অরিজিনাল নয়,  পূর্বের কোন ভিডিও বারবার ব্যবহার করা হচ্ছে এ ধরনের ভিডিও গুলোর  ডিস্ট্রিবিউশন ফেসবুক অটোমেটিকভাবে সীমিত করে ফেলে।  

যে ভিডিওগুলা সম্পূর্ণ নতুন এবং বেশি পরিমাণে শেয়ার করা হচ্ছে সেই  ভিডিও কনটেন্টগুলো ফেসবুক সবচেয়ে বেশি ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করে।

বর্তমান সময়ে ফেসবুক নিউজফিডকে আরো বেশি ব্যক্তিকরণ করে ফেলেছে। 2019 সালের মে মাসে ফেসবুক এই আপডেটটি নিয়ে আসে।   

আপডেট বলা হয়, একজন ব্যবহারকারী তার ফেসবুক ওয়ালে সেই কনটেন্ট গুলো দেখবে যেগুলো সে সবচেয়ে বেশি দেখতে পছন্দ করছে।

ফেসবুক কিভাবে বুঝবে একজন ব্যবহারকারী কোন কন্টেন্টগুলো সব থেকে বেশি পছন্দ করছে?

এজন্য ফেসবুক একটি সমীক্ষা পরিচালনা করে।

সমীক্ষায় ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয় তারা যে গ্রুপ গুলোতে জয়েন করেছে সেই গ্রুপগুলো থেকে কোন ধরনের কনটেন্ট দেখতে পছন্দ করছে।  

তাদের উত্তরের ওপর নির্ভর করে ফেসবুক ব্যবহারকারীর পছন্দ সম্পর্কে ধারণা করে এবং সেই ধারণার ওপর ভিক্তি করে তার নিউজফিডে কনটেন্ট গুলো দেখানো হয়।

অনেক সময় আমাদের নিউজফিডে এমন কিছু কন্টাক্ট আসে যা আমরা পছন্দ করিনা, তখন আমরা সেটি হাইড করি কিংবা রিমুভ করে ফেলি।  

এগুলো ফেসবুকের কাছে সিগন্যাল হিসেবে পৌঁছাই। 

ফেসবুক মনে করে সেই কন্টেন্ট আপনি দেখতে পছন্দ করছেন না। আর এমন কনটেন্টগুলো ফেসবুক আপনাকে দেখাবে না।

আমরা যখন কোন গ্রুপে বা পেজের পোস্টগুলো লাইক কমেন্ট বা শেয়ার করি সেগুলো ফেসবুকের কাছে সিগন্যাল হিসেবে যায়। এখান থেকে ফেসবুকের আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স অনুমান করে কোন ধরনের পোস্টগুলো আপনি পছন্দ করছেন।  পরবর্তী সময়ে সেই ধরনের পোস্টগুলো আপনাকে বেশি পরিমাণে দেখানো হয়।

মূলত আপনার ফেসবুক ফ্রেন্ড লিস্ট, কন্টাক্ট লিস্ট, ফটো ট্যাগ, লোকেশন ট্যাগ, পোস্ট শেয়ারিং বিহেভিয়ার এ ধরনের সিগনালগুলো থেকে আপনার পছন্দের ধরন অনুমান করতে সাহায্য করে। 

ফেসবুকের বিজনেসের সফলতায় পরিবর্তনশীল অ্যালগোরিদমের সাথে মানিয়ে নিয়ে অর্গানিক রিচ ধরে রাখতে হলে কি করতে হবে?

সঠিক টার্গেট অডিয়েন্সের জন্  ভ্যালুয়েবল ও ইউনিক কন্টেন্ট তৈরি করার কোনো বিকল্প নেই।  কিন্তু কীভাবে করবেন কাজটি?

পাঁচটি পরামর্শ, যা অর্গানিক রিচকে ধরে রাখতে সহায়তা করবে পাশাপাশি কন্টেন্টের রাঙ্কিং বাড়িয়ে তুলবে। 

ইমোশনকে  ফোকাস করুনঃ

ইমোশনাল কন্টেন্ট অডিয়েন্সদের এঙ্গেজ করতে অত্যন্ত কার্যকর। এমন ধরনের কনটেন্ট তৈরি করুন যা  অন্যকে এডুকেট করে, এন্টারটেইন করে এবং ইন্সপায়ার করে ।

এ ধরনের কনটেন্ট গুলোতে মানুষ বেশি পরিমাণে এঙ্গেজ হয় তাদের প্রশ্ন ও মতামত প্রকাশ করার মাধ্যমে। অধিক অডিয়েন্স এর সাথে যুক্ত হবার ফলে কনটেন্টগুলোর ফেসবুক রাঙ্কিং বেশি হয়। 

হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ এ প্রকাশিত একটি গবেষণা মতে ৬ ধরনের ইমোশনাল কনটেন্ট সামাজিক মাধ্যমগুলোতে সবথেকে বেশি শেয়ার হওয়ার প্রবণতা থাকে।

সেগুলো হচ্ছে,

  1. প্রশংসা
  2. বিস্মিত
  3. বিস্ময়
  4. কৌতূহল
  5. স্বার্থ
  6. অনিশ্চয়তা

একটি ফেসবুক পেজের কন্টেন্ট থেকে সর্বোচ্চ ফলাফল পেতে চাইলে এই ইমোশনগুলো ব্যবহার করে কনটেন্ট তৈরি করুন।  

“ফেসবুক বিজনেসে সফল হতে হলে একটি দুর্দান্ত কন্টেন্ট তৈরির কোন বিকল্প নেই” 

এঙ্গেজমেন্ট বাইট থেকে সাবধান

আমরা অনেক সময় কনটেন্টের সাথে লাইক করুন, শেয়ার করুন, কমেন্ট করুন এ ধরনের শব্দগুলো ব্যবহার করি।

ফেসবুক এ ধরনের শব্দকে ফিল্টার করে এবং এই ধরনের শব্দ যুক্ত পোস্টগুলোর ডিস্ট্রিবিউশন লিমিট করে দেয়।  

তাই কনটেন্ট তৈরির সময় এ ধরনের শব্দ ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। 

মনে প্রশ্ন আসতে পারে, সবাইতো ব্যবহার করছে শব্দগুলো, তাহলে আমি করলে ক্ষতি কি?  

শুনুন বিজনেসটা আপনার, তাই এই বিজনেসের লাভ-ক্ষতিও আপনার একান্ত ব্যক্তিগত।  অন্যের সাথে তুলনা করে আপনার বিজনেসকে নিশ্চয়ই ক্ষতিগ্রস্ত করতে চাইবেন না। 

ফেসবুকে পোস্ট এর সাথে সঙ্গতিপূর্ণ কোটেশন ব্যবহার করুন

গুরুত্বপূর্ণ এবং রিলেটেড কোটেশন সম্বলিত পোস্ট  শেয়ার হওয়ার প্রবণতা 19 শতাংশ বেশি থাকে। 

তাই কার্টেসি মেনটেন করে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় কোটেশন ব্যবহার করে পোস্ট তৈরী করুন। এ ধরনের পোস্ট এঙ্গেজমেন্ট বাড়াতে সহায়ক।

ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করুন

বর্তমান সময়ে ফেসবুকের সবচেয়ে বেশি রাঙ্কিং পাচ্ছে ভিডিও কনটেন্ট। জানলে আশ্চর্য হবেন, বর্তমান সময়ে প্রতিদিন এই প্লাটফর্মে 8 বিলিয়ন ভিডিও ভিউ হয়। 

ফেসবুকে ভিডিও কনটেন্টগুলোর রিচ ও এনগেজমেন্ট সবচেয়ে বেশি।  একটি স্থির ছবি থেকে একটি ভিডিও কনটেন্ট 135 শতাংশ বেশি পরিমাণে অর্গানিক রিচ নিয়ে আসে। 

ভিডিও তৈরি করার সময় ভিডিওর সাথে ক্যাপশন দিতে ভুলবেন না। দেখা গেছে 82% ফেসবুক ব্যবহারকারী ভিডিও কনটেন্ট এর সাউন্ড অফ করে  ভিডিও দেখে। 

ভিডিও মধ্যে ক্যাপশন থাকলে সেই ভিডিওটি 367 শতাংশ বেশি এনগেজমেন্ট নিয়ে আসতে সক্ষম। 

আরও পড়ুনঃ 

ফেসবুক লাইভঃ অডিয়েন্স এবং ফলোয়ারদের সাথে যুক্ত হবার শক্তিশালী মাধ্যম

শান্ত থাকুন এবং নিয়মিত ফেসবুকে অ্যাড দিন

ফেসবুকে অ্যাড দেওয়া মাত্রই বেশি পরিমাণে রিচ এবং ইংগেজমেন্ট পাবেন এমন ধারণা থেকে বেরিয়ে আসুন। 

ফেসবুক বিজনেস পেজের  মাধ্যমে বিজনেসে (ROI) পেতে আপনাকে ভিন্ন ভিন্ন কনটেন্ট নিয়ে পরীক্ষা করতে হবে।

খুঁজে বের করতে হবে কোন ধরনের কনটেন্টগুলো  অডিয়েন্স সবথেকে বেশি পছন্দ করছে এবং সেই কনটেন্টগুলো জন্য আপনাকে ইনভেস্ট করতে হবে।

কনটেন্ট গুলোর সাথে যে অডিয়েন্স গুলো এঙ্গেজ হচ্ছে তাদেরকে যথাযথভাবে নারচারিং করার মাধ্যমে আপনার বিজনেস পেজের প্রতি আগ্রহ এবং ভালোবাসা তৈরি করে ধরে রাখতে কৌশলী হতে হবে। 

অর্গানিক রিচের মাধ্যমে একটি পেজকে জনপ্রিয় করে তোলা বর্তমান সময়ে খুবই কষ্টসাধ্য এবং প্রায়  দুরূহ ব্যাপার।

আপনার কনটেন্ট সৃষ্টিশীল না হয় তবে গড়পড়তা টাইপ কন্টেন্ট দিয়ে স্বল্প সময়ের মধ্যে বড় অডিয়েন্স গ্রুপকে রিচ করা সম্ভব নয়।

তাই পেইড ক্যাম্পেইন আদর্শ, এতে অল্প সময়ে বড় একটি  টার্গেট অডিয়েন্স গ্রুপকে রিচ করা সম্ভব হয়।  

তাই, বর্তমান সময়ে বেশি রিচ পেতে হলে আপনাকে পেইড এডভার্টাইজিং করতে হবে।

ফেসবুক সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় কিছু তথ্য জেনে নেয়া যাক

  • মোবাইলে ফেসবুক ব্যবহার করে মোট 2.26 বিলিয়ন মানুষ  এবং ডেক্সটপ দিয়ে ফেসবুক ব্যবহার করে 1.47 বিলিয়ন মানুষ
  • ফেসবুক ব্যবহারকারীদের মধ্যে 54% মেয়ে এবং 47% পুরুষ
  • ফেসবুকে 7 মিলিয়ন বিজ্ঞাপনদাতা  রয়েছে
  • ফেসবুকে প্রতিদিন 100 মিলিয়ন ঘন্টা ভিডিও ভিউ হয়
  • প্রতি 60 সেকেন্ডে,  317,000 স্ট্যাটাস আপডেট হয়; 400 নতুন ব্যবহারকারী  যুক্ত হয়; 147,000 ফটো আপলোড হয়; এবং 54,000   লিংক শেয়ার হয়ে থাকে।
  • ফেসবুকে 120 মিলিয়ন  ফেক ইউজার রয়েছে

ফেসবুক বিজনেসে সফল হতে যে সকল গুণাবলী থাকতে হয়

 

সফলতা কোন একটি নির্দিষ্ট বিসয়ের উপর নির্ভর করে না। অনেকগুলো  বিষয়ের সমন্বয় একজন মানুষকে, একটি বিজনেসকে সফল করে। 

অনলাইন বা অফলাইন সব ধরনের বিজনেসে সফল হতে হলে যে বিষয়গুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং অধিকাংশ এক্সপার্টরা যেগুলোর সাথে একমত হয়েছেন সে বিষয়গুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।

শক্তি এবং উৎসাহ

বিখ্যাত একটি উক্তি রয়েছে, যে কাজটি করতে আপনি ভালোবাসেন সেই কাজটি আপনি করুন।  এতে আপনি কখনোই কাজের মধ্যে থাকবেন না ।

একজন সফল উদ্যোক্তা তার কাজটি করতে ভালোবাসেন। তিনি তার কাজের মধ্যে শক্তিপান, তিনি সর্বদা উদ্যমী এবং নতুন কিছু শেখার আগ্রহ তার মধ্যে  সর্বদা থাকে।

বিজনেস অনলাইন হোক কিংবা অফলাইনে, আপনাকে কঠোর নিষ্ঠার সাথে পরিশ্রম করে যেতে হবে এবং সেই পরিশ্রম সার্থকতা পায়, যে পরিশ্রম সর্বোচ্চ শক্তির উৎস দ্বারা পরিচালিত।

ধৈর্য

ধৈর্য সকল গুনের মধ্যে শ্রেষ্ঠ।  ধৈর্যশীল মানুষের কাছে সফল ধরা দেয়। বিজনেস শুরু করার পরপরই রাতারাতি কেউ সফল হয় না।  

বিজনেসে কখনো সফলতা থাকে, কখনো ব্যর্থতা থাকে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে ধৈর্য ও সাহসিকতার সাথে পরিস্থিতির মোকাবেলা করে যারা এগিয়ে যেতে পারে তাদের জন্যই সফলতা পুরস্কার হয়ে আসে।

অনলাইন বিজনেসের  ক্ষেত্রে ধৈর্য সবার প্রথমে প্রয়োজন। মানুষ আপনাকে সরাসরি না দেখে শুধুমাত্র আপনার প্রোডাক্ট এর ছবি এবং তার বর্ণনা পড়ে কেনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। 

তাই অনলাইন বিজনেস পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রতিটি ধাপে আপনাকে হতে হবে ধৈর্যশীল।

হতে হবে আত্মবিশ্বাসী

আত্মবিশ্বাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যে ব্যক্তি নিজেকে বিশ্বাস করতে পারে না তাকে অন্যরা কখনোই বিশ্বাস করবে না।

আপনাকে বিশ্বাস করতে হবে, আপনি যে ব্যবসা পরিচালনা করছেন সেটিতে নিশ্চয়ই সফলকাম হবেন। সফল হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন, লক্ষ্য স্থির করে সেদিকে আত্মবিশ্বাসের সাথে এগিয়ে যাবেন।

অনলাইন বিজনেসের প্রথমদিকে পর্যাপ্ত সাড়া না পাওয়া ও কাস্টমারদের নেগেটিভ কমেন্ট অথবা নিন্দুকদের সমালোচনায় অনেকেই শুরুতেই হতাশ হয়ে ছিটকে পড়ে যায়।  

আপনাকে জানতে হবে কিভাবে নেতিবাচক ভাবনা পরিহার করে আত্মবিশ্বাসী হওয়া যায়। 

অধ্যবসায়

একবার না পারিলে দেখো শতবার।  আজকে আমি বিফল হয়েছি তাই কালকে আমি সফল হবো না,  এমনটি কেউ বলে দিতে পারে না।  

পৃথিবীর অনেক বড় বড় বিজনেস কঠিন পরিস্থিতির মোকাবেলা করে সফল হয়েছে। অধ্যবসায় তাদের অন্যতম অস্ত্র।  এই মহান গুনটি আপনাকে অর্জন করতে হবে।

অভিযোজন ক্ষমতা

এই পৃথিবীতে তারাই সফলকাম হয় যারা পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে। 

একজন সফল উদ্যোক্তা মার্কেটের পরিবর্তিত পরিস্থিতির প্রতি সব সময় সচেতন, নতুন টেকনোলজি নতুন নতুন সমস্যা নিত্যনতুন কৌশল ও মার্কেট প্রতিযোগিতার বিষয়ে সর্বদা সচেতন থাকে।

তারা খুব দ্রুত পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে নিজেকে মানিয়ে নেয়, প্রয়োজনীয় পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং সফলকাম হয়।

ঝুঁকি সহনশীলতা

বিজনেসে ঝুঁকি থাকবেই।  আপনাকে জানতে হবে  বিজনেসের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়গুলো  কি কি।  

থাকতে হবে ব্যাকআপ প্ল্যান,  প্ল্যান রেডি করার জন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা ব্যবস্থা থাকতে হবে,, করতে হবে মার্কেট এনালাইসিস।

ঝুঁকি সহনশীলতা মানে এমন নয় আপনি সব সময় ঝুঁকিকে গ্রহণ করার মানসিকতা রাখবেন। আপনি উদ্বুদ্ধ ঝুঁকিকে কৌশলগতভাবে কতটা কমিয়ে আনতে পারেন সেটি মুখ্য।

সৃষ্টিশীলতা

একজন ভাল উদ্যোক্তার মধ্যে সৃষ্টিশীলতা প্রয়োজন। বর্তমান সময়ে প্রোডাক্টের লাইফ সাইকেল ক্রমাগত কমে আসছে। কারণ প্রচুর নতুন নতুন প্রোডাক্ট খুব স্বল্প সময়ে বাজার দখল করছে, প্রতিযোগিতাপূর্ণ বাজারে নিজের অবস্থান ধরে রাখতে হলে হতে হবে সৃষ্টিশীল। 

পুরনো সৃষ্টিকে নতুনরূপে বারবার ফিরিয়ে আনার ক্ষমতা রাখতে হবে।

দৃষ্টিশক্তি

যেখানে সাধারন মানুষেরা কিছুই দেখতে পায় না ব্যবসায়ীরা সেখানে সুযোগ দেখেন। 

তারা প্রতিনিয়ত মার্কেটের অবস্থা, প্রোডাক্ট রেনোভেশন, কাস্টমারদের পছন্দ-অপছন্দ ও চাহিদার কথা চিন্তা করেন।

যখনই কোন একটি সম্ভাবনার রাস্তা  খুঁজে পান সেটিকে কাজে লাগানোর জন্য পরিকল্পনা তৈরি করা এবং সঠিক সময়ে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে ব্যবসায় মুনাফা অর্জন করেন। 

সুযোগ কারো জন্য অপেক্ষা করে না। দূরদৃষ্টি সম্পন্ন মানুষ সম্ভাব্য সুযোগকে কাজে লাগানোর জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে।  

দৃষ্টিভঙ্গি

সাধারণ মানুষ এবং একজন উদ্যোক্তার মধ্যে মূল পার্থক্য হচ্ছে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি।  বর্তমান এবং ভবিষ্যৎকে দেখার ধরন। 

প্রশ্ন আসতে পারে দৃষ্টিভঙ্গি বিজনেসের জন্য কি ধরনের গুরুত্ব রাখে।  একজন মানুষ আরেকজন মানুষকে খুঁজে পাই তার  দৃষ্টিভঙ্গির উপর নির্ভর করে।  একজন রুচিশীল মানুষ সর্বদা রুচিশীল মানুষকে আকৃষ্ট করে।

বিজনেস পরিচালনার ক্ষেত্রে, আপনি কাস্টমারদের জন্য প্রোডাক্ট ও সার্ভিস ডিজাইন করছেন। তাই সঠিক প্রোডাক্ট ও সার্ভিসটি তৈরি করতে হলে আপনাকে বুঝতে হবে কাস্টমারদের রুচি এবং পছন্দ। 

এক্ষেত্রে তাদের প্রতি আপনার দৃষ্টিভঙ্গি বিজনেসের মূল পার্থক্য তৈরী করে দেয়।

নেতৃত্ব দেবার যোগ্যতা

সবাই নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হয় না। একজন মানুষ তার দক্ষতা এবং যোগ্যতার  দ্বারা অন্যকে অনুপ্রাণিত করে, উৎসাহিত করে তাদের মধ্যে কাজ করার উদ্দীপনা তৈরি করে। 

একজন ভাল উদ্যোক্তা এবং ব্যবসায়ী হওয়ার অন্যতম শর্ত হচ্ছে নেতৃত্ব দেবার যোগ্যতা

পরিকল্পনা

কিছু করার পূর্বে সে সম্পর্কে চিন্তা করাকেই পরিকল্পনা বলে। প্রতিটি কাজের জন্য পরিকল্পনা প্রয়োজন, পরিকল্পনা যত সুচিন্তিত ও সুপরিকল্পীত হবে ততই  সফল হবার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। 

কোন সফলতাই পরিকল্পনা ছাড়া হঠাৎ করে পাওয়া সম্ভব নয়.

দ্রুততম সময়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা

সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব হলে পিছিয়ে পড়তে হয়। সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা আবশ্যক।

সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় অবশ্যই স্থির থাকবেন, ফোকাসড থাকবেন। অনেক সময় সিদ্ধান্ত ভুল হতে পারে। ভীতসন্ত্রস্থ হবার কিছু নেই। 

আপনি যত দ্রুত এবং সঠিকভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে সক্ষম হবেন বিজনেসের জন্য ততই মঙ্গল।

আত্মউন্নয়ন

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অনেকেই বিশেষ পরিচালনার জন্য সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত থাকে। একসময় সেই প্রতিষ্ঠান যদি তাকে সহায়তা করতে অসম্মতি প্রকাশ করে তবে ব্যবসায়ী ক্ষতির সম্মুখীন হন। 

আমরা বিশ্বাস করি আত্ম-উন্নয়নে। বিজনেস সম্পর্কে আপনি নিজে জানুন, শিখুন এবং প্রয়োজনে অন্যের সহায়তা নিন। তাহলে পরিস্থিতির কারণে কোনো সহযোগী প্রতিষ্ঠান যদি আপনাকে ছেড়ে যায়, আপনি থেমে থাকবেন না।  

অনলাইন বিজনেসে সফল হতে হলে যে পাঁচটি বিষয় নিশ্চিত করতে হবে

 

২০২০ সালের শেষ দিকে এসে আপনার অনলাইন বিজনেসকে সফল করে তুলতে হলে যথেষ্ট পরিশ্রম করতে হবে। 

আপনার প্রতিযোগিরা ই-কমার্স বিজনেসে এক নম্বর স্থান দখলের জন্য ক্রমাগত চেষ্টা করে যাচ্ছে তার বিপরীতে আপনি কি করছেন? নিজেকে প্রশ্ন করুন?

৮০% ই-কমার্স বিজনেস সফল হতে পারে না। কারণ তারা জানে না যে তারা কি করছে কেন, করছে এবং তারা তাদের কাস্টমারদের এটি দারুণ অভিজ্ঞতা দিতে ব্যর্থ।

আপনার ই-কমার্স বিজনেসটিকে সফল করে তুলতে হলে নিচে উল্লেখ করা পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আপনাকে নজর দিতে হবে।

ব্র্যান্ড হোক বিজনেসের উদ্দেশ্য

আপনার ব্র্যান্ড হচ্ছে আপনার বিজনেসের পরিচয় তাই আপনার ব্র্যান্ড ঠিকই প্রকাশ করছে সে বিষয়ে আপনাকে পরিষ্কার ধারণা রাখতে হবে।

যখন mercedes-benz গাড়িটির কথা বলা হয় তখন আপনার মাথায় কি আসে?  

এটি একটি লাক্সারি কার এবং অনেক ব্যয়বহুল। যখন টয়োটা  গাড়ির কথা বলা হয় তখন আপনার মাথায় কি আসে? এটি মধ্যম দামি গাড়ি এবং মধ্যম আয়ের মানুষদের জন্য। 

কেউ যখন mercedes-benz গাড়িটা কিনছে তখন সে শুধু একটি গাড়ি কিনছে না।  সে তার সাথে মর্যাদা কিনছে। তাই আপনি যখন একটি ব্র্যান্ড তৈরি করছেন তার অর্থ আপনি একটি গোষ্ঠীর মানুষকে আকৃষ্ট করছেন।

লো বাজেট গাড়িতে সমস্ত ফিচার পরিপূর্ণভাবে থাকেনা। যদি আপনি পাওয়ার চান তবে আরাম পাবেন না, যদি আরাম চান তাহলে কন্ট্রোলিং পাবেন না, যদি কন্ট্রোলিং চান তাহলে আউটলুক পাবেন না।

কিন্তু আপনি যখন একটি লাক্সারি কার কিনবেন সেখানে সমস্ত ফিচারের সাথে কন্ট্রোল, কমফোর্ট, আউটলুক, পাওয়ার একসাথে পাবেন।

mercedes-benz শব্দটি পরিচিত হচ্ছে তার উপযোগিতা দ্বারা। যা চাহিদার সকল সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে। 

একজন মানুষ যখন প্রথমবার সেই গাড়িটি ব্যবহার করবে সে তার অনুভূতি কখনো ভুলবে না এবং প্রথম অনুভূতি তারা তাকে যদি আবিষ্ট করতে সক্ষম হন তবে সে আপনার প্রতি লয়াল থাকবে।

ব্র্যান্ড তৈরির ক্ষেত্রে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ইউনিক সেলিং প্রপোজিশন। বিষয়টি কি?  

আপনার ব্র্যান্ডটি কেন অন্যদের থেকে আলাদা সেটিই মূলত ইউনিক সেলিং প্রপোজিশন।

বাজারে মোবাইল ব্র্যান্ডের মধ্যে কিছু জনপ্রিয় ব্র্যান্ড যেমন স্যামসাং,  হুয়াওয়ে,  অপ্পো, রিয়েল মি ইত্যাদি।  এখন আমি যদি অপ্পো মোবাইলটির নাম উচ্চারণ করি, তবে মাথার মধ্যে আসবে ক্যামেরা ফোন বা সেলফি এক্সপার্ট।

বাজারের সবগুলো ফোনের কাজ একই, কথা বলা যায়, ছবি তোলা যায়, ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায় কিন্তু এর মধ্যে থেকেও অপ্পো নিজেকে আলাদা করতে সক্ষম হয়েছে। 

কারণ সবার মোবাইলে ছবি তোলা গেলেও তারা দাবি করে তাদের মোবাইলে সবথেকে চমৎকার সেলফি তোলা সম্ভব।

আপনার বিজনেসকে প্রতিযোগিতা থেকে যতবেশি আলাদা করে তুলতে পারবেন,  ততবেশি আপনি সবার কাছে সমাদৃত হবে।  আপনাকে মনে রাখবে এবং পরবর্তী কেনার সময় কাস্টমার আপনার কথা চিন্তা করবে।

এক্ষেত্রে কাস্টমার রিভিউ খুব গুরুত্বপূর্ণ।  দেখা গেছে কাস্টমার যখন কোনো একটি প্রোডাক্ট অনলাইনে কেনার পর খুশি হয় সে পরবর্তী পাঁচ জনকে পরামর্শ দেয় অনলাইনে কেনাকাটার জন্য।  

কিন্তু কেউ যখন প্রতারিত হয় তখন সে অগণিত মানুষকে অনলাইনে কেনাকাটা না করতে উপদেশ দিতে থাকে।

তাই আপনার ব্র্যান্ডটির মূল উদ্দেশ্য হতে হবে আপনি যেটি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন সেটিকে বাস্তবায়ন করুন। 

খেয়াল করবেন অপ্পো ফোনে যদি চার্জ কম থাকে কিন্তু তারা যেহেতু ক্যামেরা ফোন বলছে আর সেটি যদি নিশ্চিত হয়, তবে আপনি নিঃসন্দেহে বাকি দুর্বলতাগুলোকে মেনে নিবেন।

আর এজন্যই শুধু প্রোডাক্ট নয় ব্র্যান্ড হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করা খুব গুরুত্বপূর্ণ।  

যেখানে আপনি সবার থেকে আলাদা ভাবে নিজেকে উপস্থাপনের মাধ্যমে বাজারে একটি অনন্য বিজনেস হিসেবে পরিচিতি লাভ করবেন এবং কাস্টমার আপনাকে আপনার প্রতিষ্ঠানে গ্রহণ করবে। 

আর সেটি না করে শুধুমাত্র প্রোডাক্টের কোয়ালিটি দিয়ে বাজার দখলের চেষ্টা করেন তবে এর ফলাফল সবসময় সুখকর হয় না। 

বাজারে এমন অনেক প্রতিষ্ঠান বিলুপ্ত হয়ে গেছে শুধুমাত্র তারা প্রতিযোগীদের থেকে নিজেকে আলাদা করতে সক্ষম হয়নি যদিও তাদের প্রোডাক্ট কোয়ালিটি অসাধারণ ছিল।

 ১৯৯০ সালের পরবর্তী সময়ে সিটিজেন, নিপ্পন টেলিভিশন ব্র্যান্ড বাংলাদেশ পপুলার হতে থাকে। কারণ তাদের প্রোডাক্টের কোয়ালিটি ভালো ছিল আর সে সময় সনি টেলিভিশন ছিল সবার রাজা । যারা ৯০ দশকের জেনারেশন ছিল তার একটু খেয়াল করলেই দেখবেন প্রতিটি বাড়িতেই সেসময় সিটিজেন, নিপ্পন এবং সনি টিভির প্রচন্ড দাপট ছিল। সনি টিভি দামি তাই সবাই এটি কিনতে পারতো না।

তবুও সিটিজেন বা নিপ্পন টেলিভিশন তাদের মার্কেটে অবস্থান তৈরি করতে পারে নাই কারণ তারা কোয়ালিটিতে গুরুত্ব দিলেও মার্কেটিংয়ে যথেষ্ট দুর্বল ছিল।

তাই প্রোডাক্টের পাশাপাশি আপনার মূল উদ্দেশ্য হোক ব্র্যান্ড হিসেবে পরিচিত করানো যেন মানুষের কাছে আপনার মূল্যায়ন এবং চাহিদা দুটোই চলমান থাকে। 

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন

অনেকেই ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করার পর পরেই বলেন আমার ওয়েবসাইটটি গুগলে সবার উপরে নিয়ে আসেন। বিষয়টিকে তারা খুব সহজেই বলে ফেলেন কিন্তু আপনি কি জানেন সারাবিশ্বে 24 মিলিয়নেরও বেশি ই-কমার্স ওয়েবসাইট রয়েছে এবং এটি প্রতিদিন বেড়েই চলেছে। 

এরা সবাই গুগলের প্রথম পেজে আসতে চায় কিন্তু গুগলের প্রথম পেজে সর্বোচ্চ ৫০ থেকে ১০০ টির বেশি রেজাল্ট আনা সম্ভব নয় তাহলে একবার চিন্তা করুন, গুগলের সার্চে প্রথমে আসতে হলে আপনাকে কতটা পরিশ্রম করতে হবে।

প্রয়োজন সঠিক এসইও, সেজন্য আপনাকে তৈরি করতে হবে একটি এসইও ফ্রেন্ডলি ওয়েবসাইট। এক্সপার্টদের দ্বারা প্রতিনিয়ত সেটি অপটিমাইজ করতে হবে এবং এটি খরচ সাপেক্ষ ব্যাপার।

প্রশ্ন আসতে পারে এটি কেন করবো চিন্তা করেন তো, আপনি যখন গুগলে কোন কিছু  সার্চ করেন তখন কি লিখে সার্চ করেন।  

আরেকটু সহজ করে দেই, ধরুন আপনি জুতা কিনবেন তাহলে কি লিখবেন?  বেস্ট সু সেলার ইন বাংলাদেশ অথবা আপনি একটি ট্রাস্টেড ই-কমার্স ওয়েবসাইট খুঁজে পেতে চাইলে কি লিখবেন?  বেস্ট ই-কমার্স ওয়েবসাইট ইন বাংলাদেশ বা টপ ই-কমার্স ওয়েবসাইট ইন বাংলাদেশ।

এই  শব্দগুলি আমরা লিখছি এগুলো  একেকটি কিওয়ার্ড, যেমন বেস্ট ই কমার্স একটি কিওয়ার্ড, টপ ই কমার্স ওয়েবসাইট ইন বাংলাদেশ একটি কি ওয়ার্ড। 

অর্থাৎ আপনি গুগলে যখন কোন কিছু সার্চ দিচ্ছেন তখন কিওয়ার্ড রিসার্চ দিচ্ছেন।  তাই অবশ্যই এটির প্রতি গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। 

কাস্টমার অভিজ্ঞতা ভালোবাসে

কাস্টমার যখন অনলাইনে কেনাকাটা করছে তখন তার কাছে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে কোন ই-কমার্স ওয়েবসাইট থেকে এসে ঝামেলা মুক্তভাবে এবং সহজে কেনাকাটা সম্পন্ন করতে পারছে

যদি আপনার প্রোডাক্ট কোয়ালিটি ভালো হয় কিন্তু আপনার ই-কমার্স ওয়েবসাইট থেকে কেনাকাটা কষ্টসাধ্য,  তবে কখনোই কাস্টমার আপনার থেকে কিনবে না।

আপনাকে এমন একটি ই কমার্স কেনাকাটা অভিজ্ঞতা কাস্টমারদের দিতে হবে, যেন তারা কোনো রকম বাধা ছাড়াই আপনার ই-কমার্সের ওয়েবসাইটে ল্যান্ড করা থেকে শুরু করে চেক-আউট প্রসেস পর্যন্ত প্রতিটি ধাপ নির্বিঘ্নে চালিয়ে যেতে পারে।

আপনার ই-কমার্স ওয়েবসাইট আসার পর দেখা গেল প্রোডাক্টের ইমেজ পেজ লোড হয় না,  কি মনে হয়? কাস্টমার কি আপনার ওয়েবসাইটে সেই ছবিটি লোড হওয়া পর্যন্ত ধৈর্য নিয়ে বসে থাকবে। কখনোই না। আপনি হলে কি করতেন? 

স্বচ্ছতা ও আস্থার জায়গা তৈরি করুন 

দুটি ই-কমার্স ওয়েবসাইটের কথা চিন্তা করুন, একটিতে শুধুমাত্র ফোন নাম্বার দেওয়া আছে সেলারের সাথে যোগাযোগের জন্য আর অন্য ওয়েবসাইটে আছে সেলারের ফোন নাম্বার, অফিস এড্রেস এবং সেটি গুগল ম্যাপে দেখানো হয়েছে কিভাবে সেখানে আপনি পৌঁছাবেন। 

প্রথম ই কমার্স ওয়েবসাইটে শুধু মূল্য  ছাড়া অন্য কিছু দেয়া নাই। শিপিং চার্জ কত ডিসকাউন্ট আছে কিনা কিছু জানা যায়না। 

অপর ওয়েবসাইটটিতে  দেখলেন ডিসকাউন্ট যদি থাকে সেটি বাদ দিয়ে মূল্য দেখাচ্ছে এবং কত টাকা ডিসকাউন্ট পেয়েছেন সেটিও সেখানে উল্লেখ রয়েছে। 

বাসায় ডেলিভারি পেতে কত টাকা শিপিং চার্জ বা ডেলিভারি চার্জ দিতে হবে সেখানে উল্লেখ রয়েছে। যদি আপনার কোনো অভিযোগ থাকে বা পরামর্শ থাকে তবে সেটি প্রদানের জন্য ডেডিকেটেড ফোন নাম্বার এবং ইমেইল দিয়ে রেখেছে। আর বাকি সব এড্রেস তো আছেই

আপনি কোনটি বেছে নিতেন?  

নিশ্চয়ই যে তার সমস্ত যোগাযোগ মাধ্যম ওপেন রেখেছে তাকে।  

আপনি যত বেশি স্বচ্ছতা ও নিরাপত্তা প্রদান করবেন কাস্টমারদের।  ততবেশি তারা আপনার প্রতি আস্থা রাখবে। আর যত বেশি আস্থার জায়গাটা শক্ত করতে পারবেন তত বেশি কাস্টমারদের ওয়েবসাইটে ধরে রাখতে পারবেন। বারে বারে বেশি বেশি বেচাকেনা করতে পারবেন।

এঙ্গেজমেন্ট

অনেক সেলার রয়েছেন যারা শুধুমাত্র প্রোডাক্টের ছবি পোস্ট করে ডেসক্রিপশন লিখে দিয়েই শেষ। 

কাস্টমার একবার কেনাকাটা করার পর পরবর্তীতে আর কেনাকাটা করতে আসবে কিনা সে বিষয়টি তিনি আর ভাবেন না । অথচ তিনি চান তার বিক্রয় বেশি হোক। কিভাবে এটি সম্ভব যদি না আপনি কাস্টমারদের  ক্রমাগতভাবে আপনার সাথে এঙ্গেজ রাখতে না পারেন।

ফেসবুকে পোস্ট করছি আবার এঙ্গেজমেন্ট এর কি দরকার?  এমন প্রশ্ন অনেকেই করেন।  ফেসবুকে পোস্ট বুস্ট করা মানে এঙ্গেজমেন্ট নয়।  ফেসবুক বুষ্টিং এর অনেকগুলো উদ্দেশ্য রয়েছে তার মধ্যে একটি হচ্ছে এঙ্গেজমেন্ট।

সেলিং অ্যাড এর পাশাপাশি এঙ্গেজমেন্ট ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু কিভাবে সেটি করবেন?  একটু ধারনা দেয়া যাক।

আপনি ফ্যাশন ব্র্যান্ড নিয়ে কাজ করছেন আপনার প্রোডাক্ট হচ্ছে ডিজাইন ড্রেস।  ফেসবুকে পোস্ট করলেন কাস্টমার কিনলো,  এর পরে কি?

কাস্টমার কি পরবর্তী সময়ে প্রতিদিন আপনার পেজে বারবার আসবে?  

তাদের নতুন কোনো চাহিদা এখন নেই এই মুহূর্তে আপনাকে যেটা করতে হবে সেটি হচ্ছে, ডিজাইন ড্রেসগুলো কিভাবে তারা রক্ষণাবেক্ষণ করবে, কোন পরিবেশের সাথে কোন ধরনের ড্রেস মানানসই,  ব্যক্তিত্বের সাথে মানিয়ে কোন কালারগুলো একজন বেছে নেবেন সে বিষয়গুলো নিয়ে আপনি ব্লগ আকারে অথবা টেক্সট আকারে ফেসবুক অথবা আপনার বিজনেস ব্লগে লেখালেখি করতে পারেন।

এতে যে সুবিধাটি হবে, কাস্টমার গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় তথ্যের জন্য আপনার সাথে এঙ্গেজ থাকবে। ফলে আপনার বিজনেস এক্সপোজার বহুগুণে বেড়ে যাবে এবং পরবর্তী সময়ে যখনই তার কোন কিছুর প্রয়োজন হবে প্রথমেই আপনাকে বেছে নেবে।

আর এজন্যই ই-কমার্স বিজনেস ক্রমাগত কাস্টমারদের এঙ্গেজ করে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং অনস্বীকার্যভাবে প্রয়োজন।

ফেসবুক বিজনেসের জন্য কি ধরনের প্ল্যান প্রয়োজন

বিজনেস কিংবা প্রতিদিনের জীবন  প্রতিটি জায়গায় পরিকল্পনা প্রয়োজন।  তবে প্রশ্ন যখন সোশ্যাল মিডিয়ার, তখন আপনাকে একটি পরিকল্পিত কর্মপদ্ধতি তৈরি করতেই হবে নচেৎ পিছিয়ে পড়বেন প্রতিযোগিতার এই বাজারে।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং প্ল্যান তিনটি মূল ভাগে ভাগ করা যায়

  1. এট্রাকশন
  2. প্রমোশন
  3. সেলস

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং প্ল্যানের আরো অনেক শাখা রয়েছে তবে একটি মূল বিষয়গুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ,

এট্রাকশন

 প্রথমে বিজনেস পেজ এর জন্য অডিয়েন্স তৈরি করতে হবে, একটি পেইজ নতুন করার পরপরই আপনি লক্ষ লক্ষ অডিয়েন্স পেয়ে যাবেন না।  আপনাকে সময় নিয়ে ধৈর্যের সাথে আপনার শ্রোতা তৈরি করতে হবে।

কিভাবে সেটি করবেন?  কাস্টমারদের সমস্যার জায়গাগুলোর চিহ্নিত করবেন।  সে বিষয়ে সম্ভাব্য পরামর্শ দিয়ে তাদের পাশে থাকবেন।  অর্থাৎ আপনি কাস্টমারদের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

এতে করে যারা কোন বিষয় নিয়ে জানতে আগ্রহী বা সমস্যার সম্মুখীন হবেন তারা আপনার প্রতি মনোযোগী হবে।

প্রোমোশন

কাস্টমারদের সমস্যা ও চাহিদাগুলোকে কিভাবে আপনি পূরণ করছেন বা কোন প্রোডাক্ট গুলো সেটি পূরণ করতে সক্ষম সেই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করবেন।  

অর্থাৎ  কাস্টমারদের সমস্যা এবং চাহিদার বিপরীতে তাদের সমাধানের পদ্ধতি নিয়ে আপনি কথা বলবেন এবং খুব সুকৌশলে আপনার প্রোডাক্ট এবং সার্ভিসগুলো কে সবার সামনে তুলে ধরবেন।  পক্ষান্তরে আপনি আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের প্রচারই করছেন। 

সেলস

এই ধাপে আপনি প্রোডাক্ট ও সার্ভিসগুলো কেনার জন্য কাস্টমারদের উৎসাহিত করবেন এবং একশন গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় কল টু একশন প্রদান করবেন।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর এই তিনটি প্রধান অংশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বটে। 

ফেসবুক বিজনেসের  সফলতায় কি ধরনের অ্যাকশন প্ল্যান করবেন?

২ বিলিয়ন অ্যাক্টিভ ইউজারদের মধ্যে থেকে আপনার টার্গেট কাস্টমারদের খুঁজে বের করা এবং তাদের সাথে বিজনেস করা মোটেও সহজ কাজ নয়। 

ফেসবুকে একটা ছবি দিলেই  বা একটা পেজ থাকলেই সে কাজটি হয়ে যায় না।  আপনাকে প্রতিক্রিয়াশীল হতে হবে সৃষ্টিশীল হতে হবে, সক্রিয় হতে হবে।

ফেসবুক পেজ অপটিমাইজেশন

আপনি কোন ধরনের বিজনেস সার্ভিস নিয়ে কাজ করছেন সে মোতাবেক আপনার ফেসবুক পেজ টেমপ্লেট এবং কীওয়ার্ড নির্বাচন করতে হবে যেন কাস্টমার সহজেই আপনাকে খুঁজে পেতে পারে।

কোয়ালিটি কাভার পেজ

ফেসবুক বিজনেসের জন্য কাভার ফটো খুব গুরুত্বপূর্ণ। কেউ একজন আপনার পেজে আসার পরপরই সবার প্রথমে যেটা দেখতে পায় সেটি হচ্ছে কভার পেজ।  এটি অনেকটা বিলবোর্ড অ্যাড এর মতো কাজ করে।

একটি সৃষ্টিশীল ও উন্নত মানের কাভার ফটো সহজেই কাস্টমারদের মনোযোগ আকর্ষণে সক্ষম

কল টু অ্যাকশন

পেজে যাবার পর কাস্টমার আপনার সাথে যোগাযোগ করার ক্ষেত্রে কী করবে?  সে কি আপনাকে মেসেজ দিবে?  আপনাকে ফোন করবে?  

আপনি কি ধরনের যোগাযোগ মাধ্যমে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন তার থেকে গুরুত্বপূর্ণ আপনার কাস্টমার কোন ধরনের যোগাযোগ মাধ্যম দ্বারা আপনার সাথে যোগাযোগ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবে এবং এটিকে মাথায় রেখেই কল টু অ্যাকশন নির্ধারণ করবেন। 

অরিজিনাল পোস্ট তৈরি করুন

কাস্টমারদের জন্য প্রতিদিন নতুন নতুন পোস্ট তৈরি করুন এবং সেটি ফেসবুকের মাধ্যমে শেয়ার করুন।  একই পোস্ট বারবার দেখতে কেউ পছন্দ করেনা। 

পোস্ট তৈরী করার ক্ষেত্রে অবশ্যই  সৃষ্টিশীলতা ও রুচিশীলতাকে প্রাধান্য দেবেন।  আপনি যেমন পোষ্ট করবেন সে ধরনের মানুষকে আকৃষ্ট করতে সক্ষম হবেন।

কনটেন্টের ধরন সম্পর্কে সচেতন হোন

আপনি কি জানেন?ফেসবুক এর সবথেকে বেশি এঙ্গেজমেন্ট যে ধরনের কনটেন্ট নিয়ে আসে সেটি হচ্ছে ভিডিও কনটেন্ট।  

তাই শুধুমাত্র স্টিল পিকচার বা এনিমেশনের উপর নির্ভর না করে ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করুন। 

কাস্টমার রিভিউ

ফেসবুক বিজনেস কিংবা ই কমার্স বিজনেস সবক্ষেত্রেই কাস্টমার রিভিউ পার্থক্য তৈরি করে দেয়

কাস্টমার রিভিউ নিয়ে 2017 সালে একটি জরিপে দেখা যায়

  • ৮৫% কাস্টমার ব্যক্তিগত রিভিউ থেকে অনলাইনের কাস্টমার রিভিউকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে দেখে।
  • একজন কাস্টমার অনলাইনে কেনাকাটায় একটি বিজনেসকে ট্রাস্ট করার আগে কমপক্ষে সাতটি রিভিউ পর্যালোচনা করে।
  • কাস্টমার রিভিউ এর ফিডব্যাক দেয়াকে ৩০% কাস্টমার ইতিবাচকভাবে দেখেন।

ফেসবুক অ্যাড ক্যাম্পেইন চালানো

বর্তমান সময়ে ফেসবুকের অর্গানিক রিচ অলমোস্ট জিরো অর্থাৎ আপনি ফেসবুকে টাকা না দিলে আপনার পোস্টটি আর আগের মত রিচ করবে না। 

এজ, জেন্ডার, লোকেশন সিলেক্ট করে বুস্ট রান করে দিলেন তাহলেই অ্যাড হয়ে  গেল বিষয়টি কিন্তু এমন নয়।

আপনার প্রোডাক্টের ধরনের উপর নির্ভর করে কয়েক প্রকার ফেসবুক অ্যাড ক্যাম্পেইন চালানো যায়। যেমন    ক্যারোজেল অ্যাড,  অফার অ্যাড,  ভিডিও অ্যাড এমন  অনেক ধরনের অ্যাড তৈরি করার মাধ্যমে অ্যাড ক্যাম্পেইন তৈরি করবেন।

এছাড়াও নির্দিষ্ট লক্ষ্য উদ্দেশ্য পূরণের জন্য রয়েছে উদ্দেশ্যভিত্তিক অ্যাড ক্যাম্পেইন।  

আপনি কি অর্জন করতে চাচ্ছেন, তার উপর নির্ভর করে বেছে নিবেন আপনার অ্যাড ক্যাম্পেইনের টাইপগুলো।

পরিশেষে

ফেসবুক বিজনেসে সফল হতে হলে প্রতিটি খুঁটিনাটি বিষয় গুরুত্বসহকারে খেয়াল রাখতে হবে।  যদি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা ও বিজনেস সম্পর্কে পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকে তবে হুটহাট করে ঝোঁকের বশে অথবা অন্যের দেখে বিজনেস আরম্ভ করা আপনাকে মারাত্মক রকম ক্ষতির সম্মুখীন করতে পারে।

প্রোডাক্ট সম্পর্কে জানুন, বিজনেস সম্পর্কে পরিস্কার ধারনা রাখুন , কাস্টমার সম্পর্কে জানুন, পরিকল্পনা করুন,  কৌশলী হোন আর বেশি বেশি বেচাকেনা করুন।

আপনার ফেসবুক বিজনেসের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?  জানিয়ে কমেন্ট করুন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট

বিজনেসের জন্য ফেসবুক লাইভ (Facebook Live) গাইড:  কি, কেন, কীভাবে?

বিজনেসের জন্য ফেসবুক লাইভ (Facebook Live) গাইড: কি, কেন, কীভাবে?

শেয়ার করুনফেসবুক লাইভ (Facebook Live) কি? ফেসবুক লাইভ ফেসবুকের এমন একটি ফিচার যা একজন ইউজারকে তার বন্ধু, ফলোয়ার এবং পাবলিকদের...

একটি প্রফিটেবল ই-কমার্স বিজনেস শুরুর কমপ্লিট গাইডলাইন

একটি প্রফিটেবল ই-কমার্স বিজনেস শুরুর কমপ্লিট গাইডলাইন

শেয়ার করুনআপনি যদি উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখেন বা আপনার বিশেষ কোনো স্কিল থাকে (যেমন – ছবি আঁকা, কাস্টম ড্রেস তৈরী...

ব্যবসার জন্য ফেসবুক পেজ নাকি ই-কমার্স ওয়েবসাইট – কোনটা ভালো?

ব্যবসার জন্য ফেসবুক পেজ নাকি ই-কমার্স ওয়েবসাইট – কোনটা ভালো?

শেয়ার করুনকামাল একজন ফেসবুক সেলার – ফেসবুক এর মাধ্যমে তিনি ফ্যাশন আইটেম বিক্রি করেন।  ইদানিং ব্যবসা নিয়ে কামাল বেশ দুশ্চিন্তার...

আপনার মূল্যবান মতামত দিন

মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না। আবশ্যক ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত *

আগের মন্তব্য গুলো পড়ুন

User Avatar
Najmul Hossain 4th November 2020 12:05 pm
আপনার মতামতের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। ই কমার্স বিজনেস মার্কেটিং নিয়ে আগামীতে দারুণ সব ব্লগপোষ্ট পড়তে আমাদের সাথে থাকুন।
User Avatar
শেখ সাগর 3rd November 2020 07:27 pm
চমৎকার