৭টি মার্কেটিং টিপস যা আপনার বিজনেসকে ক্রমাগত উন্নতির দিকে নিয়ে যাবে

শেয়ার করুন

বিজনেসে উন্নতি করতে হলে প্রয়োজন ক্রমাগত গ্রোথ। এমন কিছু মার্কেটিং টিপস রয়েছে যা আপনার বিজনেসকে প্রতিদিন সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সহায়ক ভূমিকা রাখে। কিন্তু তারপরেও সফলতা আমাদের কাছে ধরা দেয় না। কারন আমরা জানি না কিভাবে মার্কেটিং টিপস গুলো রিয়েল লাইফে ব্যবহার করতে হয়। 

এখানে ৭টি এমন টিপস শেয়ার করা হয়েছে যা আপনার বিজনেসে বেশি বেশি ট্রাফিক নিয়ে আসার মাধ্যমে বিজনেসকে বড় করে তুলতে সাহায্য করবে।      

বেশি বেশি ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করুন 

কনটেন্ট মার্কেটিং এর অনেকগুলো পদ্ধতি রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম সেরা একটি পদ্ধতি হচ্ছে ভিডিও কনটেন্ট। 

জরিপে দেখা গেছে প্রায় ৮৮% মার্কেটিয়ার বিজনেসের সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এ ভিডিও কন্টেন্ট ব্যবহার করে যে ROI অর্জন করেছেন তা তাদের সন্তুষ্ট করেছে। ভিডিও মার্কেটিয়ারদের ৮৩% বলেছেন ভিডিও কন্টেন্ট তাদের লিড জেনারেট করতে সহায়তা করেছে।

প্রায় ৮৪% মানুষ বলছে তারা লাইভ প্রোডাক্ট দেখার মাধ্যমে কেনাকাটা করতে সবথেকে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। 

বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যদি আমরা খেয়াল করি তবে দেখা যায় লাইভ নির্ভর প্রোডাক্ট সেলিং অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে চলেছে। 

কাস্টমার খুব সহজেই ভিডিওতে সরাসরি প্রোডাক্ট দেখার মাধ্যমে প্রোডাক্ট নিয়ে সকল ধরনের প্রশ্ন করতে পারেন এবং রিয়েল টাইম উত্তর পান। 

ভিডিও কনটেন্ট তৈরি এখন খুব সহজ। সমসাময়িক সময়ে এজন্য উচ্চমানের ক্যামেরা সেটআপ প্রয়োজন নেই, আপনার হাতে থাকা মোবাইল সেটটি এ কাজটি সম্পন্ন করতে সক্ষম। 

যখন ভিডিও কনটেন্ট এর কথা বলছি তখন ভিডিও কনটেন্ট দিয়ে আপনি কি কি করতে পারবেন?

খেয়াল করবেন ভিডিও কনটেন্ট শুধুমাত্র কাস্টমারদের এঙ্গেজ করা বা শুধু তাদেরকে বিনোদন দেওয়া না, এর বাইরে একটি ভিডিও কনটেন্ট বিজনেস মার্কেটিং-এ শক্তিশালী ভূমিকা রাখে। 

ভিডিও কনটেন্টের মাধ্যমে আপনার ভ্যালু প্রপোজিশন ব্যাখ্যা করা সহজ, ভিডিও কনটেন্ট প্রোডাক্ট ডেমনস্ট্রেট করতে সহায়তা করে, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এ একটি ভিডিও সর্বোচ্চ এনগেজমেন্ট নিয়ে আসতে পারে। 

তাই ফেসবুক তার ইউজারদের বিশেষ ভাবে ভিডিও কনটেন্ট বেশি বেশি তৈরি করার ব্যাপারে উৎসাহ দান করছে।

সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে অথেন্টিসিটি তৈরি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর সফলতা এবং ব্যর্থতার নির্ণয়ক কাস্টমার সার্ভিস। এই সকল ক্ষেত্রেও ভিডিও কনটেন্ট আপনাকে যথেষ্ট সহায়তা প্রদান করে।  সরাসরি কাস্টমার ফিডব্যাক অথবা কাস্টমারের এক্সপেরিয়েন্স সম্পর্কে জানতে লাইভ ভিডিও দুর্দান্ত। 

শুধু কি তাই, এটি বিজনেস ম্যানেজমেন্টের জন্য সমান গুরুত্বপূর্ণ। সমসাময়িক সময়কে সবাইকে অফিসে এসে ইন্টারভিউ দিতে হবে তার প্রয়োজন নেই। একটা প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন সময় লোকবল নিয়োগের প্রয়োজন পড়ে এবং আপনার কাছে যদি এমপ্লয়ীদের ডেটাবেজ থাকে তবে তাদের সাথে অনলাইনে ভিডিও কলিং এ ফেস টু ফেস মিটিং অ্যারেঞ্জ করার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগ করতেও সক্ষম হবেন। 

ট্রেনিং এর কথা না বললেই নয়, একজন এমপ্লয়ির সর্বোচ্চ কর্মদক্ষতা নিশ্চিত করতে প্রয়োজন প্রপার ট্রেনিং এবং আপনি যেকোন লোকেশন থেকেই তাকে সেই ট্রেনিং দিতে সক্ষম হবেন সে জন্য শুধুমাত্র আপনার ওয়েবক্যাম ওপেন করতে হবে।

অতএব যারা বিজনেসে ভিডিও কনটেন্ট বা ভিডিও কমিউনিকেশন সুবিধা এখনো ব্যবহার করছেন না, তারা সময় এবং সুযোগের যথার্থ ব্যবহার নিশ্চিত করতে সক্ষম হচ্ছেন না। 

নিয়মিত বিজনেস ডেটাগুলো পর্যবেক্ষণ করুন 

আমরা উদ্যোক্তাদের বারবার বলে থাকি আপনারা বিজনেস ডাটাগুলোকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করুন। কারন বিজনেস ডেটা আপনাকে বুঝতে সাহায্য করে বিজনেসে আপনি পরবর্তী সিদ্ধান্ত কি নেবেন, কোথায় কোথায় খরচ করবেন, এবং প্রোডাক্ট এডভার্টাইজিং এর জন্য কি করনীয়। 

আপনার মনে হতে পারে, আমার কাছে আইডিয়া আছে,আমি জানি কি করতে হবে, তাহলে ডেটা আমার জন্য কি প্রয়োজন? 

অবশ্যই ডেটা আপনার অতীব প্রয়োজন। কারণ আপনার অভিজ্ঞতা শুধুমাত্র আপনাকে ধারণা প্রদান করে কিন্তু ডেটা আপনাকে কতটুকু পদক্ষেপ নিতে হবে সেটি নির্ধারণ করে দেয়। বিজনেসে কাস্টমারদের দেয়া ডিস্কাউন্ট কোডগুলো কাজ করছে কিনা, আপনার কাস্টমার একুইজিশন যথার্থ হচ্ছে কিনা ইত্যাদি প্রসঙ্গে যা একটি বিজনেসের স্মুথ অপারেশনের জন্য জরুরি। 

জেরিন বিগত ১০ বছর ধরে একটি অনলাইন বিজনেস পরিচালনা করে আসছে। সমসাময়িক সময়ে তার সেলের অবস্থা দিন দিন শোচনীয় পর্যায়ে কমে এসেছে।

পুরনো কাস্টমার নেই, নতুন কাস্টমারের সংখ্যাও কম এমন অবস্থায় সে ঠিক বুঝে উঠতে পারছে না কি করতে হবে। যেহেতু সে লম্বা সময় বিজনেস পরিচালনা করেছে তাই তার কাছে অভিজ্ঞতা আছে কেন এবং কিভাবে একটা বিজনেস উপরে উঠে।

কিন্তু সত্যিকার অর্থে কোন পদক্ষেপ তাকে নিতে হবে সে বিষয়ে তার একেবারেই ধারণা ছিল না।

বিজনেসের সমস্যা নিরসনে সে একদিন ডেটা এনালাইটিক এর কার্যকারিতা সম্পর্কে জানতে পারে।সিদ্ধান্ত নেয় তার বিজনেস গ্রোথ এবং প্রবলেম আইডেন্টিফাই করার জন্য ডেটা অ্যানালিটিক্স সহায়তা নিবে। তারা একজন ই-কমার্স এজেন্সির কাছে যায় এবং কিভাবে বিজনেসে ডেটাগুলোকে সুসজ্জিত উপায় ট্র্যাক ও বিশ্লেষণ করতে পারে সেই বিষয়ে পরামর্শ করেন।

কিছু এনালইটিক্স টুলস তার ই-কমার্স সাইটে যুক্ত করা হয়। কিছুদিন পরে ডেটাগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় প্রতিমাসে তার বিজনেসে কাস্টমার রিটেনশন রেট ৫%, নতুন কাস্টমার একুইজিশন ১%  অপরদিকে সোশ্যাল মিডিয়া এনালিটিক থেকে দেখা যায় অ্যাড খরচের বিপরীতে কাস্টমার এঙ্গেজমেন্ট কম। প্রতিমাসে কাস্টমার এঙ্গেজমেন্ট কার্ভ নিচের দিকে যাচ্ছে।  

এমন একটি পরিস্থিতিতে তিনি বিগত ৩ বছরে কোনোভাবেই তার সেলস টার্গেট অ্যাচিভ করতে পারেননি।

এনালইটিক্স থেকে তিনি বুঝেছেন তাকে কোথায় পরিবর্তন আনতে হবে। তার প্রয়োজন এই মুহূর্তে অ্যাড খরচের পরিমাণ কমানো, কাস্টমার এঙ্গেজমেন্ট বাড়ানো, নতুন কাস্টমার একুইজিশন ও কাস্টমার রিটেনশনে মনোযোগী হওয়া। 

এবারে তিনি মার্কেটিং এ যে পরিমাণ ব্যয় ইতিপূর্বে করে আসছিলেন তার আলোকে পরবর্তী কি পরিমান বাজেট বর্তমানে এলোকেট করবেন এবং সেখান থেকে কি পরিমানে রেজাল্ট তিনি পেতে চান সেটির সংখ্যা নির্ধারণ করে ফেলেছেন। এখন সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। 

আপনি যখন সুস্পষ্টভাবে জানবেন আপনাকে কি করতে হবে সেই মুহুর্তে আপনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সক্ষম হবেন এবং এটি আপনার বিজনেসকে ক্রমাগত উন্নতির দিকে নিয়ে যাবে। 

কিভাবে ডাটা এনালাইসিস করবেন? 

ডেটা এনালাইসিস করার অনেকগুলো পদ্ধতি রয়েছে বিশেষ করে বর্তমান সময়ে যাদের বিজনেস বড় এবং প্রচুর পরিমাণে ডাটা আসতে থাকে তাদের জন্য বিগ ডেটা এনালাইসিস হচ্ছে আদর্শ সলিউশন। কিন্তু আজকে আমরা কথা বলছি মূলত তাদের জন্য যারা ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা তাদের নিয়ে। 

বিগ ডেটা এনালাইসিস কিছুটা ব্যয়বহুল ব্যাপার, কিন্তু মোটামুটি বড় একটি বিজনেসের ডেটা এনালাইসিস করার জন্য অনেকগুলো টুলস রয়েছে যেগুলো ব্যবহার করে আপনি সহজে ডেটা এনালাইসিস করতে সক্ষম হবেন। 

গুগোল অ্যানালিটিক্স

এটা একটি ফ্রি ডেটা অ্যানালিটিক্স সফটওয়্যার যার মাধ্যমে আপনি আপনার বিজনেসের 360 ডিগ্রি ভিউ পাবেন। আপনি বুঝতে পারবেন আপনার ওয়েব ট্রাফিকের সংখ্যা সম্পর্কে, অডিয়েন্স বিহেভিয়ার সম্পর্কে, কাস্টমার রিটেনশন রেট বিষয়ে, কাস্টমারদের এনগেইজ হবার ধরন ইত্যাদি সম্পর্কে। এজন্য আপনাকে গুগল এনালাইটিক্স আপনার ওয়েবসাইটের সাথে যুক্ত রাখতে হবে। 

ফেসবুক অডিয়েন্স ইন্সাইট

যারা মূলত সোশ্যাল মিডিয়া নির্ভর বিজনেস করেন তাদের ক্ষেত্রে ফেসবুক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ট্রাফিক চ্যানেল এবং ফেসবুক অডিয়েন্স ইন্সাইটস নামে নিজস্ব একটি এনালাইটিক ফিচার। কিন্তু আমরা অনেকেই সেটি ব্যবহার করি না। 

অডিয়েন্স ইন্সাইটের মাধ্যমে আপনি পেজের অডিয়েন্সদের টোটাল এক্টিভিটিজ মনিটর করতে পারবেন। তারা কখন আপনার পেজে একটিভ থাকছে, কতজন অডিয়েন্স একটিভ রয়েছে, তারা আপনার পেইজের কোন পোস্ট গুলোর সাথে কিভাবে এঙ্গেজ হচ্ছে, এভাবে প্রতি মাসের, প্রতিদিনের, এমনকি পুরো বছরের তথ্য আপনি বের করতে পারবেন। 

এর বাইরে কিছু পেইড টুলস রয়েছে যেগুলো আপনাকে আরো ব্যাপক পরিসরে কাস্টমার ডেটা বিশ্লেষণের সুযোগ করে দেয়।

কিসমেট্রিক্স

বিজনেসে রিটার্ন অফ ইনভেস্টমেন্ট সম্পর্কে জানা খুব জরুরী। এই টুলস আপনাকে জানতে সাহায্য করে কাস্টমার সেগমেন্ট, কাস্টমার এঙ্গেজমেন্ট এবং কাস্টমার বিহেভিয়ার সম্পর্কে। এই টুলস ব্যাবহার করে আপনি অটোমেটিক ভাবে কাস্টমার বিহেভিওরের উপর নির্ভর করে ই-মেইল ক্যাম্পেইনগুলো সেট করতে পারবেন। এছাড়াও মার্কেটিং ক্যাম্পেইনগুলোকে আরো কার্যকর করতে আছে ট্রেনিং সুবিধা। 

ইনসাইড স্কয়ার

আমরা অনেকে যারা স্প্রেডশিট ব্যবহার করে ডেটা এনালাইসিস করি তাদের জন্যইনসাইড স্কয়ার ডেটা বিশ্লেষণের একটি আদর্শ সমাধান। আপনাকে আলাদাভাবে এক্সেলশিট ম্যানেজ করে ডেটা ম্যানেজ করার প্রয়োজন হবে না। 

এই সফটওয়্যার টি ব্যবহার করে কাস্টমার রিলেশনশিপ ম্যানেজমেন্ট থেকে শুরু করে সেলস পাইপলাইন ফোরকাস্টিং, লিড জেনারেশন, ট্রাকিং এবং কাস্টমার অ্যাক্টিভিটি এনালাইসিস সবগুলো কাজ আপনি করতে সক্ষম হবেন। আপনি এটা দ্বারা বের করতে পারবেন আপনার বিজনেস পরিচালনার সবচেয়ে শক্তিশালী দিক কোনটি এবং সব থেকে দুর্বল দিক কোনটি। 

ই-কমার্স ওয়েবসাইটটি হতে হবে মোবাইল ফ্রেন্ডলি

প্রায় ৫০% ওয়েবসাইট ভিজিট হয় মোবাইল ডিভাইস ব্যবহার করে। তাই আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে আপনার ওয়েবসাইট যাতে সকল ধরনের মোবাইল ডিভাইসে কাজ করে। 

ওয়েবসাইটটি মোবাইল ফ্রেন্ডলি হলেই আমাদের কাজ শেষ হয়ে যায় না কিছু জিনিস পরীক্ষা করার ব্যাপার থেকে যায়। আপনি কিভাবে বুঝবেন আপনার মোবাইল আপনার ওয়েবসাইটটি ফ্রেন্ডলি? 

পরীক্ষা করুন আপনার ওয়েবসাইটটি মোবাইল রেস্পন্সিভ স্ট্যাটাস   

https://search.google.com/test/mobile-friendly

উপরের লিংকটি ভিজিট করে সেখানে আপনার ওয়েবসাইটের লিংক প্রদান করে দেখুন আপনার ওয়েবসাইটটি মোবাইল ফ্রেন্ডলি কিনা। এই টুলস আপনাকে ওয়েবসাইটের বর্তমান স্ট্যাটাস সাথে এটিও দেখাবে মোবাইলে ডিভাইসে আপনার ওয়েবসাইটটি দেখতে কেমন দেখায়। 

ওয়েবসাইটটি মোবাইল রেস্পন্সিভ হওয়ার পাশাপাশি লক্ষ্য রাখবেন যেন, ইনফরমেশনগুলো অডিয়েন্স সহজে ডিসকভার করতে পারে এবং অতিরিক্ত টেক্সটব্লক এবং পপ-আপ না থাকে। ওয়েবসাইটের স্পিড হতে হবে লাইটিং ফাস্ট। ওয়েবসাইট লোড হতে যত বেশি সময় নিবে কাস্টমার বাউন্স এর পরিমাণ ততবেশি বাড়তে থাকবে। 

ওয়েবসাইটের ডিজাইন হতে হবে সিম্পল, বাটন সাইজগুলো এমনভাবে ডিজাইন করবেন যেন আপনার মোবাইল স্ক্রিনের মধ্যে সহজে ফিট করে এবং অতিরিক্ত জায়গা দখল না করে। 

খুব ছোট ফ্রন্ট সাইজ হলে মোবাইলে সেটি দেখতে অসুবিধা হয়। ফন্ট সাইজ এমনভাবে রাখুন যেটি মোবাইলে পড়তে সুবিধা হয়। কেউ যদি মোবাইল ওয়েবসাইট ব্যবহারে ভালো অভিজ্ঞতা না পায় তবে আপনাকে ছেড়ে চলে যাবে। সবশেষে নিয়মিতভাবে ওয়েবসাইটের মোবাইল পারফর্ম টেস্ট করতে থাকুন। 

শুনুন, কাস্টমার কি চায়

কাস্টমার কি চায় সেটা আপনার ফার্স্ট প্রায়োরিটি। আপনি বিজনেসে সবকিছু করার পরও কাঙ্খিত ফলাফল নিয়ে আসতে পারবেন না যদি আপনি আপনার কাস্টমারদের কথা না শোনেন। 

আপনি যদি সোশ্যাল মিডিয়া নির্ভর বিশেষ করে থাকেন তবে নিয়মিতভাবে বা নির্দিষ্ট বিরতিতে কাস্টমারদের ফিডব্যাক নিতে অডিয়েন্স পোল আয়োজন করুন।

ওয়েবসাইট এর ক্ষেত্রে আপনি সার্ভে ফ্রম জুড়ে দিন অথবা ই-মেইল এর মাধ্যমে কাস্টমার ফিডব্যাক নেবার চেষ্টা করুন। কাস্টমারের মতামত পাবার পরে সেগুলো থেকে দেখুন সবচেয়ে বেশি কোন বিষয়টি কাস্টমার আপনাদের কাছ থেকে সমাধান পেতে চায়। 

কাস্টমারদের চাওয়ার গুরুত্ব বিবেচনায় একটি লিস্ট করে ফেলুন এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেই সমস্যাগুলো সমাধান করুন।

আপনার অ্যাডে গ্রাহকদের যুক্ত করুন 

সেই অ্যাডভার্টাইজমেন্ট সবথেকে শক্তিশালী যাতে কাস্টমারদের এনগেজমেন্ট থাকে। কিন্তু কিভাবে আপনার অ্যাডে কাস্টমার এঙ্গেজমেন্ট নিশ্চিত করবেন। বিষয়টি খুব সোজা “User Generated Content”  আপনি কাস্টমারদের ইন্সপায়ার করুন প্রোডাক্ট নিয়ে তাদের অভিজ্ঞতা সরাসরি আপনার সাথে পোস্ট আকারে শেয়ার করতে। তাদেরকে টেস্টিমোনিয়াল দিতে বলুন। শুধুমাত্র স্টার রেটিং এর মাধ্যমে কাস্টমারকে সীমিত রাখবেন না।

বর্তমান সময়ে“User Generated Content” এর সবথেকে পাওয়ারফুল মাধ্যম হচ্ছে, যে প্রোডাক্টটি কাস্টমার কিনছে সে প্রোডাক্ট ব্যবহার করার পর তার একটি ইউজার রিভিউ দেওয়া। এটি  ভিডিও হতে পারে বা কপিরাইটিং হতে পারে। 

“User Generated Content” এর একটি পাওয়ারফুল উদাহরণ হচ্ছে কোকাকোলার “শেয়ার এ কোক” ক্যাম্পেইন। যেখানে কোকোকোলা তার প্রত্যেকটা বোতল পারসনালাইজড করে কিছু নাম ব্যবহার করে এবং সেগুলো কাস্টমারদের কে বলে তাদের পছন্দের মানুষের সাথে শেয়ার করতে যাদের সাথে এই নামগুলো মিলে যায়।

এটি কাস্টমার সাদরে গ্রহণ করে এবং সেই নির্দিষ্ট নাম যুক্ত কোকের বোতল সহকারে তারা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচুর পরিমাণে শেয়ার করতে থাকে তাদের পছন্দের ব্যক্তির সাথে। কোকাকোলা এই ক্যাম্পেইন তাদের সোশ্যাল মিডিয়া এঙ্গেজমেন্টকে সফলতার শীর্ষে নিয়ে যায়। 

একই রকম ক্যাম্পেইন আমরা দেখেছিলাম স্টারবাকস এর ক্ষেত্রে, প্রত্যেকটি কফির কাপে চমৎকার কিছু গ্রাফিক এঁকে সেগুলো #WhiteCupContest এই Hashtag ব্যবহার করে সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করতে বলা হয়। এটি স্টারবাকস পাঠালে তারা সেই ডিজাইন ব্যবহার করে লিমিটেড এডিশন কাপ তৈরি করে বাজারে ছাড়বে।

মাত্র তিন সপ্তাহে প্রায় ৪০০০ ইউনিক ডিজাইন তৈরি করে স্টারবাকসকে পাঠিয়েছিল এবং সেটি সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক পরিমান শেয়ার করা হয়েছিলো। 

আপনার বিজনেসের গ্রোথ স্ট্রাটেজিতে ভিন্নতা রাখুন

সব সময় একই ধরনের মার্কেটিং কৌশল কাজ করে না। বিজনেসের ডাইভারসিফিকেশন খুব দরকার। আপনি চার ধরনের গ্রোথ স্ট্যাটিজি নিয়ে ভাবতে পারেন। 

মার্কেট পেনিট্রেশন

যেখানে খুব কমন প্রোডাক্ট নিয়ে আপনি কাজ করবেন কিন্তু আপনার প্রোডাক্টের প্রাইস হতে হবে আপনার প্রতিযোগিতা থেকে অনেক কম, কিন্তু সেলের পরিমান বাড়াতে হবে। লক্ষ্য অধিক বেচাকেনার মাধ্যমে আপনি সর্বোচ্চ মুনাফা তুলে নিয়ে আসবেন। 

মার্কেট ডেভেলপমেন্ট

এক্ষেত্রে আপনাকে ভিন্ন ভিন্ন মার্কেট তৈরি করতে হবে। আপনি পূর্বে যাদের কাছে প্রোডাক্ট সেল করেছেন তার বাইরে নতুন সুযোগ আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে অর্থাৎ কাস্টমার সেগমেন্টেশন এখানে খুব গুরুত্বপূর্ণ। ধরুন আপনি লোকাল ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে কাজ করছেন হতে পারে দেশের বাইরে আপনার প্রোডাক্ট এর চাহিদা রয়েছে।  তাই আপনাকে ফরেন মার্কেট নিয়ে ভাবতে হবে। 

প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্ট

একই প্রোডাক্ট লম্বা সময় ধরে কাস্টমার অ্যাটেনশন ধরে রাখে না।  প্রোডাক্টের স্বাভাবিক নিয়মের মতো জন্ম এবং মৃত্যু আছে অর্থাৎ একটা প্রোডাক্ট যখন জন্ম গ্রহন করে এটি ধীরে ধীরে ম্যাচিওর হয় এবং এক পর্যায়ে এটি ডেক্লাইন করে। যখন প্রোডাক্ট ডেক্লাইন করে তার আগেই আপনাকে নতুন প্রোডাক্ট তৈরি করতে হবে প্রোডাক্টকে রি ব্র্যান্ডিং করে নতুন করতে হবে। 

ডাইভারসিফিকেশন

শুধুমাত্র একটি মার্কেটের জন্য একটি প্রোডাক্ট নিয়ে ব্যস্ত থাকলে হবে না। আপনাকে ভিন্ন ভিন্ন মার্কেট এক্সপ্লোর করার মাধ্যমে বিভিন্ন মার্কেটের জন্য প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্ট করে প্রোডাক্ট এবং মার্কেটের ভ্যারিয়েশন নিয়ে আসতে হবে। 

বিজনেস প্রতিযোগীদের সাথে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকুন 

কোন বিজনেস ইউনিক না, প্রতিটি দেশেই মার্কেটে প্রতিযোগী থাকে থাকে প্রতিযোগিতা। আপনার বিজনেস কত ভালো রান করবে সেটি নির্ভর করছে আপনার প্রতিযোগী থেকে আপনি কত দূর এগিয়ে আছেন। নিয়মিতভাবে আপনার প্রতিযোগীদের লক্ষ্য রাখবেন। তাদের এক্টিভিটিস, অফারগুলো বিশ্লেষণ করবেন এবং তার তুলনায় আপনি আরো বেটার প্রোডাক্ট ও সার্ভিস কিভাবে দিতে পারেন সেগুলো নিয়ে পরিকল্পনা করবেন। 

কম্পিটেটর ট্রাকিং এর জন্য কিছু পদ্ধতি রয়েছে, যেমন আপনি কীওয়ার্ড টার্গেট করে তাদেরকে ট্র্যাক করতে পারেন। তাদের নিউজলেটারগুলো সাবস্ক্রাইব করে রাখতে পারেন। এছাড়া যখনই তারা নতুন কন্টেন পাবলিশ করছে সেটির এলার্টপেতে গুগল এলার্ট ব্যবহার করুন। 

কি ওয়ার্ড ট্র্যাকিং এর জন্য গুগল ট্রেন্ড দারুন উপকারি একটি টুলস। এটি আপনার ট্র্যাক করা কি ওয়ার্ডের জন্য প্রতি সপ্তাহে বা মাসে একটি রিপোর্ট ইমেইল আকারে আপনাকে দেয়। 

পরিশেষে

বিজনেসে কাঙ্খিত ফলাফল পেতে চাইলে আপনাকে প্রতিনিয়ত ইন্ডাস্ট্রি ট্রেন্ড বিষয়ে আপডেট থাকতে হবে, পরীক্ষা করতে হবে একই সাথে আপনার বিজনেসের জন্য আদর্শ মার্কেটিং হ্যাকসগুলোর সঠিক প্রয়োগ করতে জানতে হবে। তবেই আপনি প্রতিযোগিতায় সবার চেয়ে এগিয়ে থাকবেন। 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট

বিজনেসের জন্য ফেসবুক লাইভ (Facebook Live) গাইড:  কি, কেন, কীভাবে?

বিজনেসের জন্য ফেসবুক লাইভ (Facebook Live) গাইড: কি, কেন, কীভাবে?

শেয়ার করুনফেসবুক লাইভ (Facebook Live) কি? ফেসবুক লাইভ ফেসবুকের এমন একটি ফিচার যা একজন ইউজারকে তার বন্ধু, ফলোয়ার এবং পাবলিকদের...

গুগল ট্যাগ ম্যানেজার (Google tag manager) এর কাজ ও ব্যবহার

গুগল ট্যাগ ম্যানেজার (Google tag manager) এর কাজ ও ব্যবহার

শেয়ার করুনডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে কাজ করলে অথবা ইন্টারেস্ট থাকলে আপনি হয়তো গুগল ট্যাগ ম্যানেজার (GTM) এবং ফেসবুক পিক্সেল সম্পর্কে শুনে...

৭ টি সেরা সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং (SEM) টুল

৭ টি সেরা সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং (SEM) টুল

শেয়ার করুনআজ আমরা সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং করার ৭ টি সেরা টুল সম্পর্কে ধারনা দেবার চেষ্টা করবো। সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং করার...

আপনার মূল্যবান মতামত দিন

মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না। আবশ্যক ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত *

আগের মন্তব্য গুলো পড়ুন

সবার আগে মন্তব্য করুন